গবেষণামূলক প্রবন্ধের ষান্মাসিক সাময়িকী। বাহাছ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ডিসেম্বর ২০২৩ এ। আমরা যেরকম লেখা ছাপতে ও বিলাতে চাচ্ছি তার লেখক সংখ্যা নিতান্তই কম। কারণ পশ্চিমা বা অন্য কোনো অঞ্চলের জ্ঞানকে বাঙলায় পুনরুৎপাদন আমাদের মনজিলে মকসুদ নয়। তাছাড়া আমরা যারা এই দায়িত্ব বা চাকরি নিচ্ছি তাদেরও জীবিকার তাগিদসহ আরো নানান ব্যস্ততার ব্যাপার আছে। ফলে ষান্মাসিক হলে প্যারা একটু কম হবে আমাদের, এরকম ধারণা। অফলাইনে মনোযোগ আমাদের। কিন্তু কখনো সুযোগ হলে যে অনলাইনে যাবো না, তা না। আপাতত আমাদের মনে হচ্ছে, প্রিন্টেড সাময়িকীর বড় পরিসর ও সবসময় নেড়েচেড়ে পড়তে পারবার আরাম থাকায় আমরা যা চাচ্ছি তার প্রকাশ ঘটাতে কাগুজে জার্নাল বেশ ভালো রকমের অপশন। আর্ট আর সোশাল সায়েন্সে আমাদের বর্তমান আগ্রহ, সম্ভব হলে বাণিজ্য আর বিজ্ঞানের নানান তত্ত্ব ও সমালোচনা এক্সপ্লোর করার ইচ্ছা আছে আমাদের। ফলে বাহাছ'ও যে পুনরুৎপাদনের সেই পুরোনো ব্যাপার না তা বুঝাতে ভবিষ্যতের উপর ভরসা রাখতেছি আমরা। আমরা মনে করি, বলার মতো কিছু দেয়া না গেলেও অন্তত এতটুকু পায়ের কদম রেখে যাব আমরা, যার উপর ভর দিয়ে পরবর্তী কেউ একটু অন্তত সাহস পায়। এর অংশবিশেষ হিসেবে আমরা ভাবছি টপিক প্রতি অনলাইনে পডকাস্টের আয়োজন করবো, লেখককে তার লেখার নানান ব্যাপার নিয়া সওয়াল-জবাব করবো, এতে পাঠকের সমালোচনা ও জিজ্ঞাসার সরাসরি একটা অংশগ্রহণ মতো অবস্থা তৈরী হবে যা চিন্তার আদানপ্রদানে জন্য বেশ সহায়ক হতে পারে, এমনকি তৎপরতাও তো কেউ শুরু করতে পারে এরকম কিছুতে ভর দিয়ে! টপিক নিয়া আমরা এতটুকু বলতে পারি যে, সেমি-একাডেমিক ধাঁচের লেখার দিকেই আমাদের মনোযোগ। দর্শন, ইতিহাস, ধর্মতত্ত্ব, রাজনৈতিক অর্থনীতি, সাহিত্য তত্ত্ব, অপরাধবিজ্ঞান, সাহিত্য সমালোচনা, শিক্ষা-দর্শন, ইসলাম প্রসঙ্গ, মার্ক্সবাদ, গণতন্ত্র, ফিল্ম ক্রিটিসিজমের কথা বলা যায় আমাদের বর্তমান টপিকের উপর ভর দিয়ে। এইখানে প্রথম সংখ্যায় যেসব ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ তার তার নাম নেয়া হলো এবং পরবর্তীতে যে আমাদের আগ্রহ আরো বিস্তারিত হবে তার ইশারা দেয়া হলো। এবং যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশী একটা প্রেক্ষিত রাখবার কথা ভাবতেছি আমরা, যে, জ্ঞানের স্বার্থে জ্ঞানচর্চা তো বটেই দরকারের জন্যেও জ্ঞান উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করি আমরা। বানানরীতি নিয়েও দু’কথা বলা দরকার মনে করি। বানানের ক্ষেত্রে আমরা কট্টর নই। লেখক যেভাবে পারেন পাঠকদের ভজানোর চেষ্টা করবেন নিজের লেখায়, ফলে যৌক্তিক গদ্যের পিছে অক্ষরের খেলাকে অহেতুক মনে করি না আমরা। যেহেতু লেখা লেখকের সিগনেচার হতে পারে বলেও ধারণা আমরার, সেহেতু বানান ইত্যাদি ব্যাপারে কোন আপত্তি থাকলে আমরা আবেদন রাখি সরাসরি লেখক বরাবর, কিন্তু লেখকের মতামতই শিরোধার্য থাকে। মতানৈক্যের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ লেখকের বয়ান ও লেখায় ব্যবহৃত কায়দা হয়তো আমরা বুঝতে অসমর্থ এই সময়ে, এইরকম ধরে নিয়ে জরুরত বিবেচনায় পাঠক ও ইতিহাসের দরবারে পেশ করার দায়িত্ব পালন করি মাত্র। সংখ্যাটি প্রকাশ করতে তড়িঘড়ি করতে হয়েছে আমাদের। কারণ পরিকল্পনার বয়স পুরোনো হতেই চলছিল দেখে একদিনে পুরোদস্তুর সিদ্ধান্ত নিয়ে মাসখানেকের ভিতর ছাপার কাজ শেষ করি আমরা। যারা আমাদের অনুরোধে লেখালেখির শ্রম করলেন, সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি। এবং নতুন কোন লেখক যদি আগ্রহী হয় সেই ভরসায় সম্মানীর ব্যাপারে আমাদের আহ্বানটা আবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আড্ডা ও সম্মানী দু'টোই সরবরাহ করা হবে। আমরা বলেছিলাম, লেখক সম্মানীর ব্যাপারে কিছু বলার নাই আসলে, কারণ ব্যক্তিগতভাবে যতোটুকুতে রাজি করাইতে পারেন আমাদের। তবে কেউ যদি মনে করেন টাকার চাইতে বড়ো কিছু লাগবে, তাহলে আমরা সময়ের কথা বলতে পারি। আপনার লেখার বিনিময়ে অজস্র আড্ডা হতে পারে আমাদের, আপনি বলার সময় আমরা শুনবো সবটুকু সময়। পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো এইখানে, পর্যালোচনার দরখাস্ত থাকলো আপনাদের দরবারে, ষান্মাসিকের নামের যথার্থতা যাচাই করতে ভিন্নমত প্রত্যাশা করছি খুব করে।