''মূলত মানুষ, মূলত মানস'' বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : মূলত মানুষ, মূলত মানস পাঠকের সামনে সংকলিত করেছে ইমতিয়ার শামীমের গদ্যের আর এক অভিক্ষেপ। বিভিন্ন সময়ে ছাড়া-ছাড়াভাবে যেসব গদ্য তিনি রচনা করেছেন, সেসবের মধ্যে থেকে নির্বাচিত এই কয়েকটি গদ্যের মধ্যে দিয়ে আমরা আসলে পরিকল্পিত হতে দেখি আবহমান সমকালীনতা । ইমতিয়ার শামীমের এইসব ব্যক্তিগত গদ্য তাই শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত থাকে না, তা স্পর্শ করে বৃহৎ জনজীবনের নির্মাণপ্রক্রিয়াকে। এবং আমরা অনুভব করি, প্রকারান্তরে তিনি ব্যক্ত করেন নিজের মনন গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া, ব্যক্ত করেন তাঁর ওপর সমাজ ও সমাজের মানুষের অধিকরণ প্রক্রিয়া। মৃত্যু ইমতিয়ারকে কীভাবে স্পর্শ করে, কীভাবে স্পর্শ করে জীবনসমূহের আরও একটি নতুন জন্মদিন, কীভাবে তিনি বারবার ফিরে যান বইয়ের কাছে, কীভাবে তাঁকে বইয়ের জগৎ বারবার ঠেলে দেয় মানুষের ভীড়ে মূলত মানুষ, মূলত মানস সেসবের এক অনন্য বিবরণ । মানুষের এই ভীড় ও জাগরণই ইমতিয়ার শামীমের শেষ নির্ভরতা। তিনি তাই হয়ে উঠতে পারেন মৃত্যুদণ্ডে হাসান আজিজুল হক কিংবা গভীর নির্জনতর পথের পথিক সনৎকুমার সাহার সমর্থক, তিনি তাই শ্লোগান দিতে পারেন নিপীড়িত আফ্রিকা ও যুদ্ধপীড়িত লেবাননের মানুষের ভীড়ে দাঁড়িয়ে, নিজের জন্যে আলাদা কোনও জায়গার বিন্দুমাত্র প্রত্যাশা না করে।
জন্ম : ১৩৭১ বঙ্গাব্দ, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দ ; সিরাজগঞ্জের সলপ জনপদের রামগাঁতী গ্রামে। মা : হামিদা সুলতানা। বাবা : চৌধুরী ওসমান। পেশা : সাংবাদিকতা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা : এমএসএস [সমাজ বিজ্ঞান]; রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ : ডানাকাটা হিমের ভেতর (উপন্যাস, ১৯৯৬)। অন্যান্য উপন্যাস : আমরা হেঁটেছি যারা, চরসংবেগ, অন্ধ মেয়েটি জ্যোৎস্না দেখার পর, মোল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির, তা হলে বৃষ্টিদিন তা হলে ১৪ জুলাই, আমাদের চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক, মৃত্যুগন্ধী বিকেলে সুশীল সঙ্গীতানুষ্ঠান, নীল কৃষ্ণচূড়ার জন্মদিনে, শাদা আগুনের চিতা, অন্তর্গত কুয়াশায়, যারা স্বপ্ন দেখেছিল। স্বীকৃতি : ‘মৃত্যুগন্ধী বিকেলে সুশীল সংগীতানুষ্ঠান’ গ্রন্থের জন্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য পুরস্কার (২০১২), লোক সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), জীবনানন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৪), ‘শীতের জ্যোৎস্নাজাবলা বৃষ্টিরাতে’ গ্রন্থের জন্যে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল গ্রন্থ পুরস্কার (১৪২১), কিশোর উপন্যাস ‘পাতার বাঁশি বাজে’র জন্যে শিশু একাডেমি পুরস্কার (১৪২১) এবং কথাসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০২০)।