সূচিপত্র প্রকৃতপক্ষে সব মিলিয়ে ‘আমার কণ্ঠস্বর’ যুগ ও দেশের সম্বন্ধে এক মূল্যবান মানবিক দলিলপাঠের অভিজ্ঞতার অতিরিক্ত কিছু দেয়-ওই ‘কিছু’টা হলো মানব-মনের গহন জটিল রহস্যময় অরণ্যে প্রবেশের ও পর্যটনের রোমাঞ্চ।‘আমার কণ্ঠস্বর’ আত্মস্মৃতিমূলক বাংলা সাহিত্যে এক সম্পূর্ণ অভিনব কণ্ঠস্বর-আন্তরিক,আদর্শের ও প্রবৃত্তির দ্বন্দ্বে উদ্ভ্রান্ত,শক্তিশালী ও সাহসী, সৎ ও সংরক্ত।বহু দিক থেকেই নির্মলেন্দু গুণের ‘আমার কণ্ঠস্বর’অষ্ঠাদশ শতাব্দীর ফরাসি দার্শনিক জাঁ জাক রুশোর সঙ্গে তুলনীয়। স্বাধীনতার স্বপ্নে উদ্বেলিত, কিন্তু প্রবৃত্তির নাগপাশে জর্জরিত।এ-গ্রন্থ মানবিক অস্তিত্বে এমন এক বহুমাত্রিক প্রকাশ, যা একাধারে নাটকীয় ও মর্মস্পর্শী। -সুরজিৎ দাশগুপ্ত দ্বিতীয় সংস্ককরণের ভূমিকা আমি খুশি যে, ‘আমার কণ্ঠস্বর’ পাঠক-সমালোচক ও গবেষকরা আশাতীত আদরের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। প্রথম সংস্করণে নিজের বইয়ের প্রুফ নিজে দেখার কারণে কিছু বানান ভুল থেকে গিয়েছিল। দু’একটি কমক্ষতিকর তথ্যগত ভুলও তাতে ছিল।এবার, ঐ ভুলগুলো সংশোধন করা হয়েছে।অনেকেই বইটির শেষে নির্ঘন্ট যুক্ত করার জন্য আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন।এবার ঐ দাবি পূরণ করা হলো।এই দুরূহ কাজটি বাংলা একাডেমির গ্রন্থাহগারের সহ-পরিচালক জনাব আমীরুল মোমেনীন অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে সম্পন্ন করে, একজন গবেষক হিসেবে আমাকে পুর্ণতা দান করেছেন। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। কলিকাতার বিখ্যাত ‘দেশ পত্রিকা’ ‘আমার কণ্ঠস্বর’-এর একটি দীর্ঘ-উচ্ছ্বসিত আলোচনা প্রকাশ করে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছে।সেজন্য, আমি দেশ পত্রিকার সম্পাদক শ্রীসারগম ঘোষ এবং আলোচক, সুসাহিত্যিক শ্রীসুরজিৎ দাশুগপ্তকে অভিবাদন জানাচ্ছি। একুশে অভিনন্দন। নির্মলেন্দু গুন ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ পলাশী ব্যারাক, ঢাকা।
জন্ম: জুন ২১, ১৯৪৫, আষাঢ় ৭, ১৩৫২ বঙ্গাব্দ, যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত,তিনি একজন বাংলাদেশী কবি এবং চিত্রশিল্পী। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনীও লিখেছেন। তাঁর কবিতায় মূলত নারীপ্রেম, শ্রেণি-সংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধীতা, এ-বিষয়সমূহ প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এ-গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটি ব্যাপক জরপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তীতে এর উপর ভিত্তি করে তানভীর মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমী , ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।