সাইয়্যিদ ইমাদেদ্দিন নাসিমি আজারবাইজানের এক মরমী সাধক ও কবি। মতদ্বৈধ সত্ত্বেও তাঁর জন্ম ১৩৬৯ সালে বলে মনে করা হয়। বিংশ ও একবিংশ শতাব্দীতে এসে তাঁর কাব্য ধ্রুপদী সাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে। আর তিনি নিজে হয়ে উঠেছেন আজারবাইজানি সংস্কৃতি ও জাতীয় চেতনার প্রতীক। কালের প্রহার সহ্য করে তিনি ও তাঁর সৃষ্টি অধিষ্ঠিত হয়েছে স্বমহিমায়। সমকালীন অবজ্ঞা, অবহেলা ও বিরুদ্ধবাদীদের হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েও পরবর্তীতে তিনি হয়ে উঠেছেন স্বীয় জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তাঁর দ্যুতিময় প্রত্যাবর্তন আজারবাইজানের সীমানা ছাড়িয়ে আলোড়ন তুলেছে বিশ্বব্যাপী। এর প্রমাণ মেলে ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৭৩ সালে পৃথিবীব্যাপী নাসিমির ৬০০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করার মাধ্যমে। আজারবাইজান ও মস্কোতে একযোগে এ অনুষ্ঠান পালিত হয়। তাতে পৃথিবীর নানা দেশ থেকে বহু প্রতিনিধি যোগ দেন। একই বছর একই উপলক্ষে ‘নাসিমি’ নামে আজারবাইজানি ভাষায় চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। ২০১৭ সালের মে মাসে প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে নাসিমির ৬০০তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ২০১৯ সালকে ‘নাসিমি বর্ষ' হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ইমাদেদ্দিন নাসিমির মতো কালজয়ী এক মরমী কবিকে প্রথমবারের মতো বাংলাভাষাভাষী পাঠকদের কাছে উপস্থাপন ও তাঁর কবিতা বাংলা ভাষায় প্রকাশ করতে পেরে অ্যাডর্ন প্রকাশন কৃতার্থ ও গৌরব বোধ করছে। সঙ্গে সঙ্গে এ জন্য আনন্দ অনুভব করছি যে, চৌদ্দ শতকের এহেন এক কালজয়ী কবির কাব্যকে আমরা বাংলাভাষাভাষীদের সামনে আনতে পারলাম। আশা করি বাংলাদেশের পাঠক সমাজ ভিন্ন স্বাদের কবিতার সাধ পাবেন এই কাব্যে।