নষ্ট সময়ের অন্তর্দহন,বিচ্যুত,বিধ্বস্ত ও অস্থির এই যুগবৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করে হৃদয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতি দিয়ে লিখেছেন নতুন কাব্য গ্রন্থ "সব কিছু ভেঙে পড়ে না"-এর প্রতিটি পাতা। তার কবিতায় দুঃখ আছে কিন্তু দুঃখবাদ নেই,নৈরাশ্য আছে কিন্তু নৈরাশ্যবাদ নেই। সেজন্য বোধ করি হুমায়ূন আজাদের 'সব কিছু ভেঙে পড়ে'- এর বিপরীতে লিখেছেন তার এই কাব্য গ্রন্থ। স্বতঃস্ফূর্ত আশাবাদী এই কবির 'মানুষের অন্তহীন সম্ভাবনায়' রয়েছে অগাধ বিশ্বাস। তার বিশ্বাস, স্পর্শহীন, আন্তরিকতাহীন-আইজেনের পাল্লায় পড়ে পৃথিবীর প্রাতিষ্ঠানিক বিচ্যুতি কিংবা সভ্যতার সংকট ঘটতে পারে কিন্তু মানুষ ,জীবন, সমাজ,জাতি, রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থা আপন রুপে ফিরে আসবে। ঠিকই একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে কবিতার পথে, মানুষ ফিরে পাবে তার মহৎ মর্যাদা। কবি ম্যাথিউ আর্নল্ডের সাথে দৃঢ়চিত্তে বলতে চায় , “যখন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম এবং বিভিন্ন তত্ত্ব যা মানুষকে ধারণ করে রয়েছে বা মানুষ যাদেরকে ধারণ করে আছে , সেগুলো যেদিন ব্যর্থ হয়ে যাবে এমন একটা সময় আসবে ,তখন মানুষ কবিতার দিকে ফিরবে”। তার কাছে কবিতাই জীবন, কবিতাই ছন্দ, কবিতাই তত্ত্ব, কবিতাই হবে বিশ্বের মুক্তি। সত্যিই কবিতা মানুষকে সুন্দরের পথে নিয়ে যায়। সহজ অথচ গভীর উচ্চারণের মাধ্যমেই তিনি পাঠকের মনে যে নিজের স্থান করে নিতে সফল হয়েছেন তা বুঝা যায় গত বছর প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ " নৈরাশ্যের গান"-এর প্রায় হাজার খানেক কপি বিক্রির মাধ্যমে। তার প্রাত্যহিক কাব্য সাধনা প্রায় প্রাযৌক্তিক ও উত্তরাধুনিক স্ক্রিন রিডারদের হৃদয়কে জাগিয়ে রাখুক গভীর ব্যঞ্জনায়- এই প্রত্যাশা রইল।