সাফল্য শব্দের বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। সাফল্যের আক্ষরিক অর্থ বিবেচনা করলে ব্যক্তিগত সমৃদ্ধিকেই বোঝানো হয়। তবে ভাবগত দিক থেকে এর অর্থ ব্যাপক। ব্যাপক অর্থে সাফল্য বলতে সকলের জন্য কিছু চাওয়া। বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়া, কাজের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে অনন্য হয়ে ওঠা। সাফল্য মানে স্বাধীনতা। ভয়, দুঃশ্চিন্তা, ব্যর্থতা, হতাশা, উদ্বেগ ইত্যাদি থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ নিজের কাজটিকে যখন সাহসের সাথে করে যেতে পারে তখন মানুষ সফল হয়। সাফল্যের প্রকৃত অর্থ জীবনে আত্মসম্মান, সত্যিকার সুখ ও সন্তুষ্টি লাভ করা ও মুক্ত মনে জীবনযাপন করা। পৃথিবীতে যারা অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তাদের জন্য সত্যিকার অর্থে নতুন কিছু করার সক্ষমতা অর্জন করা। এক কথায় সাফল্য মানে হলো জিতে যাওয়া। প্রত্যেকটি জীবনের লক্ষ্যই হলো সাফল্য। যেহেতু প্রত্যেকেই তার জীবনে সেরাটা কামনা করে ফলে জীবনে সফলতা অর্জনই তার লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ কখনও হামাগুড়ি দিয়ে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বাঁচতে চায় না। সে কারণে মানুষ সর্বদা সফল হতে চায়। আর মানুষ চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হতে পারে। যেমন প্রফেসর ডেভিড বলেছেন- ‘মানুষ যেমন চিন্তা করবে ঠিক তেমন হয়ে উঠবে’। বিশ্বাস হলো এক অদ্ভূত শক্তি যা অবিশ্বাস্য সাফল্য এনে দিতে পারে। এ কারণে বাইবেলে উল্লেখ আছে বিশ্বাসের মাধ্যমে পাহাড়কেও টলানো যায়। অনেকেই এই আশ্চর্য ক্ষমতার সন্ধান পায় না, কেননা তারা গভীরভাবে বিশ্বাস করতে পারে না। তবে ইচ্ছা করলেই যেকোনো কিছু হয়ে ওঠা যায় এ কথা বলার কারণ হলো মানুষ যখন কোনো কিছু করার জন্য মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে তখন সে আসলে সেই কাজটি করার জন্য সকল রকম দক্ষতা অর্জন করতে পারে। এ দক্ষতা কাজে লাগিয়ে যেকোনো অসম্ভবকে সে সম্ভব করতে পারে। এ কারণে বলা হয় গভীর বিশ্বাস থাকলে মানুষ সফল হয় এবং অসফলতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না। বিশ্বাস কোনো অলৌকিক শক্তি নয়। এটি হলো এক অত্যাশ্চর্য শক্তি, যা মানুষের মধ্যে কাজ করার দৃঢ়তা নিয়ে আসে। ফলে মানুষ মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে তার মস্তিস্কে অনেক নতুন নতুন কৌশল তৈরি হয়; যা তাকে অসম্ভব কাজকে সম্ভব করার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
ড. রেবেকা সুলতানা ১৯৮০ সালের ২ জুন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গোল্ডমেডেলসহ স্নাতক, ২০০২ সালে স্নাতকোত্তর, ২০১২ সালে এমফিল এবং ২০২১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০২০ সালে যৌথভাবে তার জয়তু বিবেকানন্দ এবং ২০২৩ সালে তাঁর প্রথম মৌলিক গ্রন্থ জীবনের ধারাপাত প্রকাশিত হয়। তিনি ডা. শামসুল হুদা ও আঞ্জুমান আরা সেবাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।