কাব্যের ধর্ম হচ্ছে রস সৃষ্টি করা। যদি এ শ্রেণির রচনা গদ্য ছন্দে তৈরি হয়, অথবা কোনো ছন্দই না থাকে এবং তাতে যদি কাব্যরস থাকে- তাহলে তাকে কবিতা বা কাব্য বলে গণ্য করতে বাঁধা থাকে না। ‘সাহিত্যে এমন অনেক রচনার পরিচয় পাওয়া যায়, যা পাঠকের চিত্তে কাব্যরসের আনন্দ দেয়। অথচ সেই ভাব ও রসের বাহন প্রচলিত ছন্দ নয়।’ বস্তুতপক্ষে কবিতা সম্পর্কে কেউ নিজের ভাবনায় বেশিদিন স্থির থাকতে পারেন না। কবিতা ক্রমাগত তার রূপ বদলাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে নিজে। কবিতা কী? সে বিষয়েও অভিন্ন কোনো মত নেই। একেক জন একেকভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন কবিতাকে। শিল্পী যে কাজ করেন রঙ দিয়ে, কবি সে কাজ করেন শব্দ দিয়ে- ঠিক এ কথাই বলেছেন কার্লাইল। তিনি কবিতাকে বলেছেন ‘মিউজিক্যাল থটস’। ওয়ার্ডসওয়ার্থ বলেছেন, ‘জীবনের সত্য ও সৌন্দর্যের পরিপ্রেক্ষিতে জীবনোপলব্ধির সমালোচনাই হলো কবিতা।’ অন্যদিকে শেলী বলেছেন, ‘কল্পনার অভিব্যক্তিই হলো কবিতা।’ জীবনানন্দ দাশের ভাষায়, ‘উপমাই কবিত্ব।’ দান্তে বলেছেন, ‘সুরে বসানো কথাই কবিতা’। এই সংজ্ঞা ছোটো হতে হতে এখন এসে দাঁড়ালো: ‘শব্দই কবিতা।’ জয়িতা হোসেন নিলু আমার শ্রদ্বা ভাজন লেখক। নিয়মিত লিখে চলেছে সে। শব্দের সঙ্গে শব্দ মিলিয়ে নিজের মনের ভাবকে অনায়াসে প্রকাশ করে এবং উপস্থাপন করে পাঠকের সামনে। তার নিজস্ব ভাবনা বা বোধই তার কবিতার অনিবার্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বোধটুকু ভালোবাসার। ভালোবাসাই জয়িতার সম্পদ। আশা করছি এই সম্পদ নিয়ে সে কাব্যাঙ্গনে দাঁড়াতে পারবে অসীম শক্তিমত্তায়। রাশেদ রউফ সহযোগী সম্পাদক, দৈনিক আজাদী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক