মোট নয়টি গল্পে গ্রন্থিত ‘তোমায় যত গল্প বলার ছিল‘ গল্প সংকলনটি। নামের মধ্যে ছড়িয়ে আছে একরাশ মায়া। সেই মায়াই ফুটে উঠেছে প্রতিটি গল্পের পরতে পরতে। আমরা কী অদ্ভুতভাবে দেখি জাপানি এক গেইশা নারীর ভালোবাসা ও না-পাবার আকুতির ভয়ংকর পরিণামের গল্প ফুটে উঠেছে ‘গেইশা’তে। ‘অহন’- এ আছে ভালোবাসার নির্মম চেহারার গল্প। ‘প্যান্ডোরাস বক্স’-গ্রিক মিথের সঙ্গে বর্তমান সময়ের সমান্তরাল এক উপাখ্যান। ‘ফ্রগ বাস্কেট’-এ আছে অন্যায় মৃত্যুর প্রতিবাদীরূপ। ‘ধূসর রঙের তুলি’ পেয়েও না পাওয়ার বেদনার কাব্য। ‘বিম্বিত বিচরণ’-এ দেখি আয়নাকে ঘিরে গা ছমছম করা রহস্যময় কাহিনি। ‘নিশি’তে আছে বহুদিনের অদেখা বান্ধবীর ডাকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসা একজন মীনাক্ষীকে। আবার ‘কঙ্কাল’-এ কঙ্কালকে বিদ্রুপ করার ভয়ংকর পরিণামের স্বরূপ রূপায়িত হয়েছে। আর শেষ গল্প আলেয়া-তে আলেয়া নামি নারী কিংবা রহস্যময় আলোর গল্পের সমান্তরাল রূপ আমাদের নিমিষেই এক মায়াময় জাদুর কাহিনিতে নিয়ে যায়। ‘তোমায় যত গল্প বলার ছিল’ গল্পগ্রন্থটি সোনিয়া রহমানের প্রথম গ্রন্থ। প্রথম বইয়েই ভিন্ন ভিন্ন দেশ ও কাহিনির নানা আখ্যান বয়ান করেন তিনি। অথচ পরিণত লেখকের মতোই তিনি প্রতিটি গল্পেই রেখেছেন সাবলীল ভাষায় স্নিগ্ধ প্রেম কিংবা লৌকিক ও অলৌকিক বিষয়ের আত্তীকরণের অপূর্ব মন্থন। আশা করি, তার এই গল্প বয়ানরীতি সহজেই পাঠক হৃদয় মথিত করবে। তৃপ্ত করবে পাঠকের তৃষিত মন।