"রত্নগর্ভে নপুংসক ভ্রুণ" কবি মামুন আশরাফী'র দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। নর-নারীর জীবনের বৈচিত্র্যময় সম্পর্কের বিষয় প্রেম-কাম ও শরীর শুধু নয়; প্রকৃতি, সমকালীন রাজনীতি, সমাজ ও ইতিহাস সচেতনতা এবং দ্রোহও যে প্রেমের কবি মামুন আশরাফী'র কবিতার অন্যতম উপজীব্য বিষয়; এ কাব্যগ্রন্থটি পড়লেই তা পরিষ্কার বোঝা যাবে। এ কাব্যগ্রন্থে কবি তার রচনা করা চার ধরনের কবিতা অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আধুনিক কবিতাধারার পাশাপাশি তাঁর আঞ্চলিক বাংলা ভাষায় রচনা করা কবিতাগুলিতে পাঠক প্রেম ও কামের এক বিচিত্র মিশ্রণ ও নতুনত্বের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন। পুরুষ ও রমণীর অন্তর্গত কামনা বাসনার আনন্দ বেদনা হাহাকার যেন বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে তার প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষার কবিতায়। বাংলাদেশ এবং বিদেশের প্রকৃতি, ইতিহাস ও প্রেমের সৌন্দর্যের বর্ণনায় কবি আশ্রয় নিয়েছেন জীবনানন্দীয় বর্ণনাধারার। তিনি মনে করেন বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং জীবনানন্দ দাশ তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জনপ্রিয় ও সিরিয়াস রচনাধারার সৃষ্টি করে গেছেন যা বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধির স্বার্থেই তাদের মৃত্যুর পরও প্রবহমান থাকার প্রয়োজন ছিলো; এবং বাংলা ভাষার সমসাময়িক কবিদেরই দায়িত্ব ছিলো বাংলা সাহিত্যের এই তিন প্রধান কবির রচনাধারাকে ভবিষ্যতের দিকে বয়ে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্যি যে এই কাজটি তাদের মধ্যে কেউই এগিয়ে নিয়ে যাননি। কবি মামুন আশরাফী তার রচনা করা কবিতা গান ও গজলে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ও জীবনানন্দ দাশের এই তিনটি রচনাধারার মধ্যে বিশেষ করে জীবনানন্দীয় রচনাধারাকে ভবিষ্যতের অভিমূখে বয়ে নিয়ে যাওয়ার চেস্টা করেছেন তার এই কাব্যগ্রন্থে। তাই পাঠক হয়তোবা জীবনানন্দের একজন উত্তরসূরীকে খুঁজে পেতে পারেন তাঁর কিছু কিছু কবিতায়।