মনোযোগ একটি সীমিত মানবিক সম্পদ। একটি বিষয়ে মনোযোগ দিলে অন্যটির প্রতি মনোযোগ কমবে। প্রচুর তথ্য-সম্পদ মনোযোগের দারিদ্র্য তৈরি করে। তথ্য-সমৃদ্ধ বিশ্বে তথ্যের প্রাচুর্যের ফলে মনোযোগের ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য তার গ্রাহকের মনোযোগ ভোগ করে। তথ্য নিজেই একটি পণ্য, মনোযোগ হচ্ছে বিনামূল্যে পাওয়া তথ্যের জন্য ক্রেতার প্রদেয় মূল্য। তথ্য বিস্ফোরণ বাজারজাতকরণকে সহজ করার পরিবর্তে জটিল করে তুলেছে। তথ্যের পরিমাণ যে হারে বেড়েছে, মানুষের তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মানবিক ক্ষমতা সে হারে বাড়েনি। অতিরিক্ত তথ্যের ফলে সিদ্ধান্তের মান না বেড়ে বরং কমেছে। খুব বেশি তথ্যই এখন সিদ্ধান্তহীনতা বা শেষ পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে না পারার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার মনোযোগের প্রতি মনোযোগী হওয়ার বিষয় নিয়ে ‘মনোযোগ বাজারজাতকরণ’ প্রবন্ধটিকেই বইটির নামকরণে ব্যবহার করা হয়েছে। অসম্ভব দ্রæত গতিতে বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি। বাজারজাতকরণে একটার পর একটা উন্নততর প্রযুক্তি আসছে। বাজারজাতকরণ প্রযুক্তি বাজারজাতকরণ কৌশলকে উন্নততর এবং কাজকে সহজতর করবে কিন্তু মৌলিক কাজগুলো অপরিবর্তিতই থেকে যাবে। এগুলো হচ্ছে; চাহিদা ব্যবস্থাপনা, ভিন্নতা ও অবস্থান ব্যবস্থাপনা এবং প্রবৃদ্ধি ব্যবস্থাপনা। এই বইয়ে এগুলোর প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সমস্যাগুলোর বাস্তবভিত্তিক আলোচনা আছে এই বইয়ে। চলমান মুদ্রাস্ফীতিতে বাজারজাতকরণ কৌশল নিয়ে দিক-নির্দেশা আছে একাধিক প্রবন্ধে। ব্র্যান্ডিং-এর বাণিজ্যিক সফলতার যুগে ব্যক্তিও ব্র্যান্ড হতে চাচ্ছে। যারা ব্র্যান্ড হতে চায় বা ব্র্যান্ড থেকে দূরে থাকতে চায় তাদের জন্য পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং বিষয়ে আলোচনা আছে এই বইয়ের শেষ প্রবন্ধটিতে। অনেক জটিল বিষয়কে সহজবোধ্য করার চেষ্টা করেছি। পাঠকদের বোধগম্য হলেই বইটি সার্থক হবে।