ভূ মি কা “খোলা চিঠি তোমার জন্য” মূলত কোনো গল্পের বই নয়। নয় কোনো কবিতার বই। সম্পূর্ণ ভিন্ন এক ভাবনা থেকেই এই বইয়ের সৃষ্টি। একজন নারীর তার প্রেমিকের কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা, অবজ্ঞা এবং পরিশেষে চূড়ান্ত বেঈমানীর ধারাবাহিক কিছু চিত্র উঠে এসেছে প্রেমিকার পাঠানো একতরফা কিছু চিঠিতে, মানে আধুনিক সময়ে যা ক্ষুদ্রবার্তা বা মেসেজ নামেই পরিচিত। এই মেসেজগুলোর সময়কাল ২০২১ সালের ১৫ জুলাই থেকে ২৫ আগস্ট। প্রেমিককে মাসের পর মাস দেখতে না পেয়ে, কথা বলতে না পেরে, প্রেমিকার ধুঁকে ধুঁকে নিঃশেষ হতে থাকা, ছটফট করতে থাকা, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া; সবকিছুই ফুটে উঠেছে ক্ষুদ্রবার্তার মাধ্যমে। তবে কি বইটি শুধুমাত্র প্রেমের অবহেলা আর কষ্টের? না, একদম নয়। শেষের দিকেই বইটির আসল রহস্য। প্রথমত, এইখানে নারী চরিত্রটি শুধুমাত্র একজন প্রেমিকার চরিত্র নয়। তার রয়েছে আরো কিছু পরিচয়। বইটি পড়তে পড়তে পাঠক তা আবিষ্কার করবে। অপরদিকে, প্রেমিক চরিত্রটি থাকে অবিবাহিত এবং মধ্যবয়সী। প্রেমিকটি প্রেমিকার সাথে তথাকথিত ভাষায় ‘টাইম পাস’ করে এবং একদম শেষে ঘটে চূড়ান্ত পরিণতি। আর প্রেমিকাটি কষ্টে নীল হতে হতে হঠাৎ একদিন ঘুরে দাঁড়ায়। উপলব্ধি করে, তাকে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। নিজের জন্য না হলেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। “খোলা চিঠি তোমার জন্য” এই বইটি পড়ে অনেকেরই হয়তো নিজের জীবনের কোনো এক সময়ের কথা মনে পড়বে। কারণ, মানুষ মাত্রই ভালোবাসার জন্য ক্ষুধার্ত। পুরোটা জীবনজুড়ে মানুষ সত্যিকারের ভালোবাসার জন্য হাহাকার করে। কিন্তু, যখন সেই মানুষের কাছ থেকে আঘাত পায়, তখন পৃথিবীটা আর সুন্দর মনে হয় না। কিন্তু সময় সব ঠিক করে দেয়। একসময় মানুষটি ঘুরে দাঁড়াতে শিখে যায়। শিখে যায়, “কাউকে পাগলের মতো ভালোবাসলেও তাকে ছাড়া বেঁচে থাকা যায় খুব সুন্দরভাবে।” আশা করি, “খোলা চিঠি তোমার জন্য” বইটি পড়ে কাউকে ছাড়াই এই পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার উপলব্ধিটা তৈরি হবে। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া একজন মানুষও যদি আমার এই বইটি পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি সঞ্চয় করে, তবেই আমার এ বই লেখার স্বার্থকতা। জুয়েনা আফসানা