এমারসন যখন বলেন, ‘প্লেটো হলো দর্শন আর দর্শন প্লেটো’ তখন আমাদেরকে এমন ভাবনায় পেয়ে বসে যে, এটি হয়ত একটি ভক্তিপূর্ণ আদিখ্যেতা; কিন্তু যখন আরও আধুনিককালে এসে অন্য অনেক দার্শনিককেই তাঁর দর্শনকে উচ্চমূল্যে মূল্যায়ন করতে দেখি, আমাদেরকে তাঁরা তাঁর ‘রাজনৈতিক তত্ত্ব, অধিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব, নীতিবিদ্যা, ভাষা, শিল্প, প্রেম, গণিত, বিজ্ঞান ও ধমর্’-এর দর্শন সম্পর্কে অবহিত করেন, আমরা তাঁর মূল লেখাজোখা এবং ব্যাখ্যাকারদের ব্যাখ্যাবিশ্লেষণ পাঠ করি, অন্যান্য দার্শনিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, চিন্তাবিদদের ওপর তাঁর দর্শনের প্রভাব লক্ষ করি, তখন আমাদেরকে উক্ত ভাবনার পথেই এগিয়ে যেতে হয়। যেমন, বিখ্যাত দার্শনিক হোয়াইটহেড্ যখন বলেন যে, ইউরোপীয় দার্শনিক ঐতিহ্যের সবচেয়ে নিরাপদ সাধারণীকরণ হলো এই যে, এটি প্লেটোর পাদটীকার একটি সিরিজ নিয়ে গঠিত, অথবা বার্ট্রান্ড রাসেল বলেন যে, ‘কোনো কোনো দার্শনিক হয়ত তাঁর মতো পরিসরে ও গভীরত্বে উপনীত হয়েছেন, কিন্তু কেউই তাঁকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি; প্লেটোর কট্টর সমালোচক কার্ল পপার বলেন যে, প্লেটোর কাজের প্রভাব (ভালো বা মন্দ যা-ই হোক না কেন) অপরিমেয়; এমন বলা যায় যে, পাশ্চাত্য চিন্তা হয় প্লেটোনীয়, না হয় প্লেটোবিরোধী, কিন্তু কদাচিৎ তা অ-প্লেটোনীয়’―তখন আমাদেরকে এমারসনের কথার যৌক্তিকতা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হয়।
১৯৫৩ সালের ১ লা অক্টোবর নরসিংদি জেলার বদরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে নীতি বিশ্লেষণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশের সচিব পদ থেকে অবসর লাভ করেন (সর্বশেষ দায়িত্ব পালন-বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক, ম্যানিলা)। তাঁর আগ্রহের বিষয় বিজ্ঞানের দর্শন ও তুলনামূলক মিথলজি। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত পুস্তুক : প্লেটোর রিপাবলিক-এর ভূমিকা; রবীন্দ্রনাথ : কার্ল পপারের নির্বাচিত দার্শনিক রচনা; প্লেটোর আইনকানুন; রিপাবলিক, সিম্পেজিয়াম, রাষ্ট্রনায়কসহ প্লেটোর ১৭টি সংলাপের অনুবাদ এবং দর্শনের আরো কিছু ধ্রুপদী গ্রন্থ।