ফ্ল্যাপে লিখা কথা দ্যা আউটসাইডার থিম যতই জটিল হোক কাহিনীকথন অত্যন্ত স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষ। মায়ের শেষকৃত্যে যাবার অব্যবহিত পরে মারসল রক্ষিতা মারী কার্দোনাকে নিয়ে বেড়াতে যায়। পড়সি রেমন্ডের অনুরোধে জড়িয়ে পড়ে এক আরব যুবকে গুলি করে, পরে হত্যার দায়ে প্রাণ দন্ডে দন্ডিত হয়।
ম্যারসলের কাছে জীবন এমন, যে বেঁচে থাকতে চেয়েছে; কারাবাসের পরাধীনতা যত অসহ্য হোক, মৃত্যুর প্রতি প্রলুব্ধ হয় নি। জীবন যেমনই হোক তা বেঁচে থাকার যোগ্য; কোন মরা গাছের গুড়িতে বাস করে শুধু আকাশ দেখার সুযোগ পেলেও সে বেঁচে থাকতে সম্মত।
দ্য ফল জাঁ-বাপ্তিস্ত ক্লামাস ছিলেন দক্ষ ফরাসী এক আইনজীবী। উচ্চ সমাজে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বিশেষ সম্মানীয় নাগরিকরূপে। কিন্তু ক্লামাঁসের জীবনে আকস্মিকভাবে এমন সব ঘটনা ঘটে গেল যার ফলে খসে পড়ল তাঁর ভাল-মানুষীর মুখোসখানা। তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন আমস্টারডামে। সেখানে তিনি ‘অনুতপ্ত বিচারক’ রূপে এক ‘শোয়ালি ভাই’কে শোনাতে লাগলেন তাঁর আত্মকাহিনী। ক্লামাসের পতন, সমস্ত মূখোসধারী সমাজেরই পতনের চিত্র। সত্যসন্ধানী ক্যামু তাঁর এই গ্রন্থখানিকে তথাকথিত সভ্য সমাজের কাছে একখানি দর্পণের ন্যায় তুলে ধরছেন আর তার ভেতর আপন আপন ভণ্ডামীর ছবি ধেখছে সমগ্র বিশ্ব-সমাজ।
‘পতন’ এই বিশাল মানবসমাজ ও সভ্যতাকে বিচলিত করে দেবার মতো একখানি বিস্ময়কর উপন্যাস।
দ্য প্লেগ ‘প্লেগ’ উপন্যাসটি প্রতীকধর্মী। একটি বাস্তব কাহিনী আপততভঅবে পাঠকদের মনে রেখাপাত করে। আরজিরিয়ার উপকূলে ওরান বন্দরে প্লেগ মহামারীর একটি ভয়াল চিত্র এই কাহিনীর তাৎক্ষণিক বিষয়। ‘প্লেগ’ যাবতীয় ধ্বংসাত্মক ব্যাধি, পাপ, এবং যে কোন মানবতাবিরোধী অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শক্তির রূপক।
লেখকের ধর্মবোধ এবং ঈশ্বরতত্ত্ব সম্বন্ধেও গভীর চিন্তার পরিচয় পাওয়া যায়। ফাদার পানেলু মহামারীর তাণ্ডবলীলার মধ্যেও পরমেশ্বরের করুণাময় উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত পেতে আগ্রহী, মারীর আক্রমণ নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যুকেও তিনি জগদীশ।বরের চরম মঙ্গলশক্তির অভিব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করতে উদ্রগ্রীব। কিন্তু পরিশেষে ফাদার পানেলুর মৃত্যু দিয়ে ক্যামু তাঁর আস্তিকতা না নাস্তিকতা, কোনটি প্রকাশ করতে চেয়েছেন?
রাজনীতির ক্ষেত্রে হিংসাত্মক বিপ্লব সম্বন্ধে মোহমুক্তি, এমনকি বিতৃষ্ণাও প্রকাশ পেয়েছে তারুর চরিত্রের মাধ্যমে। হিংসার চেয়ে সহিষ্ণাও প্রকাশ পেয়েছে তারুর চরিত্রের মাধ্যমে। হিংসা চেয়ে সহিষ্ণুতা প্রকাশ পেয়েছে তারুর চরিত্রের মাধ্যমে। হিংসার চেয়ে সহিষ্ণুতা আর ক্ষমা অনেক বেশি কার্যকর। কোন মানবিক উদ্দেশ্য সাধনের যুক্তি দিয়েই হিংসাকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়- এই বিশ্বাস ক্যামু তারুর চরিত্রের মাধ্যমে রূপায়িত করেছেন।