কত রহস্যময় আমাদের এই মনোজগৎ! এ মনোজগতের চারণভ‚মি থেকে নিরন্তর বুদ্বুদের মতো উত্থিত হয় কত বিচ্ছিন্ন চিন্তামালা। সেসব চিন্তা বিমূর্ত হয়েও আমাদের মনে মূর্ত হয়ে কখনো হাসায়, কখনো কাঁদায়, কখনো সে নিয়ে যায় অতীতের ফেলে আসা দিনগুলোতে। অনেকে সেই ক্ষণিক জগৎ থেকে অনায়াসে ফিরে আসতে পারে বাস্তবতার মাটিতে; আবার কেউ অজ্ঞাত কারণে সেখানেই আটকা পড়ে যায়। আমাদের গল্পের অবলাচরণ আজ অতীতের স্মৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ায়। সে আঁকুপাঁকু করে ফিরে আসতে। কিন্তু কে যেন তাকে সহসা ফিরে আসতে বাধা দেয়। তার জীবনের অর্জিত জ্ঞানের ভাÐারে তস্করেরা নিরন্তর চুরি করে। সে ফিরে পেতে চায় তার সম্পদ। কিন্তু সময় তার সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে তাকে চিরদুঃখী করে খেয়ালি প্রকৃতির হাতে ছেড়ে দেয়। অবলাচরণ এমন জীবন তো কখনো চায়নি! জ্ঞানার্জনের মাঝে সে তার চরিত্রের বিশেষ ত্রæটিগুলো দূর করে একজন মানুষ হতে চেয়েছিল। শৈশবে সে ছিল চরম অভিমানী। মা-বাবা মৃত্যু দেবতার অরুচি জাগাতে তার নাম রেখেছিল অবলাচরণ। সেই নাম নিয়ে ছিল তার ব্যক্তিত্বের সংকট। একটা অবহেলিত, অবাঞ্ছিত নাম নিয়ে সে কতবার তার পিতামাতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করেছে! যৌবনে আর দশজন মানুষের মতো তার ছিল লোভ, মোহ; ছিল উন্নাসিকতা; ছিল পিতৃত্বের অহংকার। জ্ঞানার্জনের কাছে আত্মনিবেদন করে সে অনেকাংশে মুক্ত হতে পেরেছিল পার্থিব জগতের অনেক চাওয়া-পাওয়া থেকে। জীবন সহজ রাস্তায় চলে না। একদিন অবলা তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী পৌত্রকে নিয়ে সম্মুখীন হয় কঠিন বাস্তবতার। তাকে নিয়ে শুরু হয় তার দীর্ঘ পথচলা। সে পথ বন্ধুর হলেও পরিশেষে তা তাকে হতাশ করেনি। সে পথ দেখিয়েছে আলোর দিশা...