কাশ্মীর, শব্দটি শুনলেই চোখের তারায় ভেসে ওঠে আরেকটি নামÑ ভূস্বর্গ। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ভূমির দেশ এই কাশ্মীর। অতুলনীয় সৌন্দর্যই বুঝি তার শত্রæ। এই সুন্দরকে দখলে নিতেই শত বছরের শকুনীয় থাবায় বিপর্যস্ত এই দেশ, সাথে রয়েছে মুসলিম-প্রধান জনপদ হবার গৌরব ও পরীক্ষা। দুটোকেই সযতেœ লালন করে যাচ্ছে এ ভূমির মানুষেরা। আজাদির সন্তান উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে কাশ্মীরের শত বছরের ইতিহাস। আজাদির পথে কাশ্মীরের ভূমিপুত্রদের কোরবানির উপাখ্যান। বঞ্চনার দীর্ঘশ্বাস, রাজনৈতিক বিরোধ, জনগণের চাওয়া ও চিন্তার পার্থক্য; গাদ্দারদের ষড়যন্ত্র ও লোভের বয়ান। কথাসাহিত্যিক সাব্বির জাদিদ নিপুণ শব্দশৈলীতে ফুটিয়ে তুলেছেন কাশ্মীরকে। কাশ্মীরের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি ও জীবনাচারÑ গল্পের ভাঁজে ভাঁজে উঠে এসেছে এসবও, বস্তুনিষ্ঠভাবে। আদনান ফাইয়াজ ও মারিয়ামের গল্প কেবল গল্পই নয়Ñ এ শত-সহস্র তরুণ-তরুণীর মর্মন্তুদ সত্যের দলিল। ভারতীয় হানাদারদের জান্তব নির্যাতনের বিবরণ। স্বপ্ন ভঙ্গের মর্সিয়া। কাশ্মীর নিয়ে এদেশের মানুষের ভিন্নরকম আবেগ ও আগ্রহ রয়েছে। কাশ্মীরের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুধু তাদের একার লড়াই নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের আত্মার ঐক্যও। আজাদির সন্তান সেই ঐক্যতানকে আরেকটু গর্বিত ও সমৃদ্ধ করবে ইনশাআল্লাহ। সাব্বির জাদিদ এ কালের শক্তিমান লেখকদের অন্যতম। তার গদ্য নান্দনিক ও চিত্তাকর্ষক। দৃশ্যকল্পের চিত্রায়ণ ও বর্ণনার মুনশিয়ানায় তার জুড়ি মেলা ভার। আশা করি, তার অন্যান্য উপন্যাসের মতো এটিও পাঠকদের মন জয় করবে।
সাব্বির জাদিদের জন্ম কুষ্টিয়ায়। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের পর মায়ের ইচ্ছায় ভর্তি হন মাদরাসায়। পড়েছেন হিফজ বিভাগে। দাওরার পাশাপাশি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন অনার্স মাস্টার্স। কৈশোর থেকেই লেখালেখির নেশা। লেখেন প্রধানত গল্প-উপন্যাস। বর্তমানে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।