উনিশশ তিরাশির শেষ প্রান্ত থেকে দুইহাজার ষোলো। তখন সিভিল সার্ভিসে হিসাব- নিকাশের জীবন আমার। পিছন ফিরে তাকালে একটা ঘোরলাগা ভালোলাগার দেখা মেলে। বাস্তবে তো সশরীরে পেছনে ফেরার সুযোগ থাকে না। তখন স্মৃতির সরণি বেয়ে হাঁটতে হয়। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় সময় ফুরিয়ে যায়, মানুষ হারিয়ে যায়। হারায় না কেবল প্রিয়মুখ, জীবনে দাগকাটা মুহূর্ত, নিজের অনুভব অনুভূতি। কাল ও সময়ের গণ্ডি সেসব মুছে দিতে পারে না। সেসব স্মৃতি শুধু নিজের মনেই ধরা দেয় না, প্রায়শই চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে এসে দাঁড়ায়। হাত বাড়ালেই স্পর্শ পাই, ঘ্রাণ নেওয়া যায়। কবে, কোথায়, কার সাথে হয়েছিল দেখা, হয়েছিল কথা। আনন্দ-বেদনার কত যে প্রহর, জীবনঘেঁষা কত না কাহিনি। মনে করিয়ে দেয় আনন্দ-বেদনা আর ভালোবাসায় সাজিয়ে রাখা কত কথা, কত স্মৃতি। তাতে আছে চাকরিকালের সুখ, আছে সুখের বিষাদ, আছে অবগাহন, উত্তরণ। কখনো পলায়ন। জীবন জগতের ভালোলাগা-মন্দলাগা, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, প্রেম-বিরহ, পাওয়া-না-পাওয়ার সুখ-যন্ত্রণা। আনন্দ ধ্বনির আড়ালে মন কাঁদানো বাঁশির সুর। একটা না একটা তো থাকেই। সে এক উন্মাদনা মুখর সময়, এক বর্ণময় মনে-পড়ার জগৎ। সেসব মূল্যবান মণিমুক্তো খচিত অতীত স্মৃতি এখনো উষ্ণতা দেয়, নিজকে সজীব রাখে। তাইতো এর সাথে জড়িত মানুষ ও সময়কে ধরে রাখার প্রয়াস। স্মৃতি বিজড়িত জীবনের বলা, না-বলা কথা, হৃদয়ের বন্দরে ছড়িয়ে থাকা কত-না স্মৃতির রেশ তুলে আনা। যদি কেউ ‘কুড়িয়ে নিতে পারে, তবে বেশ। যদি ছড়িয়ে দিতে পারে, তবে তাই’।
Abul Kasem- জন্ম কুমিল্লা জেলার ঝাকুনিপাড়া গ্রামে ১লা জুলাই ১৯৫৫-তে। প্রাইমারি স্কুল থেকেই তিনি মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সরকারি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রবেশ করেন। বর্তমানে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব। ছাত্র অবস্থা থেকেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত। দৈনিক বাংলা (অধুনালুপ্ত), দৈনিক সংবাদ, দৈনিক ইত্তেফাক, সাপ্তাহিক বিচিত্রা (অধুনালুপ্ত), বাংলা একাডেমি পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর আলোচনা, প্রবন্ধ, গল্প, গবেষণা-নিবন্ধ প্রভৃতি ছাপা হয়েছে। এযাবৎ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৪। কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদকসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।