বাংলাদেশের হাজার বছরের চিরচেনা গল্প; প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে এসেছে। কিন্তু, এভাবে কখনো লেখা হয়নি। অসংখ্য মানুষের বুকে লেখা, হৃদয়ের আর্তনাদ দীর্ঘশ্বাস হয়ে বাজে প্রতিদিন। অলিখিত সেই গল্পের লেখ্য ও কল্পিত চিত্ররূপ এবার বইয়ের পাতায়। দারিদ্র্যপীড়িত জীবন; লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও অপমান। পুষে রাখা ক্ষোভ। জিদ। বিশ্বাস, ভালোবাসায় বাঁধা ঘর। হঠাৎ স্বপ্নভঙ্গ। বিশ্বাসঘাতকতা। সন্দেহের তিরে বিদ্ধ প্রেমিক হৃদয়। অভিমান। প্রতিশোধ। বাংলা সিনেমার নায়কের মতো প্রতিশোধ। নিজের হাতে ঘর বানিয়ে নিজের হাতেই অগ্নিসংযোগ। দাউ দাউ করে জ্বলছে একটি ঘর, একটি হৃদয়। উপন্যাস পড়তে গিয়ে মনে হবে সিনেমা দেখছি। কখনো মনে হবে, এ তো মঞ্চ নাটক! বইয়ের পাতা উল্টাবেন, গল্প পড়বেন, আর নিজেকে গল্পের সঙ্গে একাকার করে ফেলবেন। নিজেকেই মনে হবে নায়ক, আবার নিজেকেই মনে করবেন ভিলেন। আর নিজের অজান্তেই বলে উঠবেন, আমি নায়ক আমিই মাস্তান। হঁ্যা, হঁ্যা, আমি নায়ক আমিই মাস্তান। আপনি তো মাস্তান হতে চাইবেনই। কারণ, খল চরিত্রের প্রচলিত সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে এই গল্প। এই গল্পে আপনি একজন ভিলেনের দুঃখে কাঁদবেন, বেদনায় বেদনাবিধুর হয়ে পড়বেন। অতঃপর নায়কের জন্য দু—ফেঁাটা চোখের জলও ফেলবেন। এই প্রথম সাহিত্যের পাতায় উঠে এসেছে নায়করাজ রাজ্জাকের কথা। আছে ঢালিউড সুপারস্টার ইলিয়াস কাঞ্চন ও মান্নার কথাও। বাদ পড়েনি পদ্মা সেতুও। কেন, এই গল্পে কী স¤পর্ক তাদের সঙ্গে? এই উপন্যাসে তাদের প্রাসঙ্গিকতা কী?
আহমেদ আল আমীন একজন বাংলাদেশি লেখক। ১৯৮৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভবানীপুরের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস পার্শ্ববর্তী ডেবরা গ্রামের সম্ভ্রান্ত হাজি বাড়ি। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে নিজ গ্রামে। কৈশোরের কিছুকাল কাটে ময়মনসিংহে। পড়াশোনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাহাঙ্গীরনগরে সরকার ও রাজনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এর আগে ঝালকাঠি, ময়মনসিংহ এবং বরিশালে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে অধ্যয়ন করেছেন। সাহিত্যের প্রতি আহমেদ আল আমীনের প্রবল ঝোঁক সেই ছোটোবেলা থেকেই। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। ২০০১ সালে প্রথম উপন্যাস লেখেন। ২০১৫ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে প্রকাশনা বিজ্ঞানী ও সম্পাদনা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুরুল ইসলামের জীবনকথা, ঝোপেঝাড়ে তারা জ্বলে প্রভৃতি।