বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া কয়েকজন টগবগে তরুণ—তরুণী। গবেষণার কাজে একদিন ঘুরতে যায় পার্বত্য জেলা বান্দরবান। সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আদিবাসীদের জীবন বৈচিত্র্য দেখে ওরা অভিভূত হয়। ঘন অরণ্য, নানা প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী, মনোরম ঝরনা ও সতেজ বাতাস যেন শহর থেকে ঘুরতে যাওয়া তরুণদের অনুভূতিতে প্রকাশের এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। পাহাড়ের গহিনে আদিবাসীদের সমৃদ্ধ গ্রামে গিয়ে তাঁদের আতিথেয়তা ও হৃদ্যতায় সবাই প্রীত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের ঘরবাড়ি, চাষাবাদ, খাদ্য, পোশাক, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব, পারিবারিক ও সামাজিক আচার—আচরণ, রীতি—নীতিসহ সংস্কৃতির নানান অংশ ভ্রমণকাহিনীর ছলে উঠে এসেছে। পাশাপাশি উঠে এসেছে এখানকার জলবায়ু পরিবর্তন, জনজীবনের সংকট ও অধিকারের প্রসঙ্গ। কাহিনীর মূল চরিত্র সিয়াম। অত্যন্ত সাহসী ও মেধাবী। জেদীও বলা যায়। ত্রিদেশীয় সীমান্তে ঝিরি পার হতে গিয়ে পা ফস্কে পড়ে যায়। স্রোতের টানে ভেসে চলে যায় মিয়ানমারের গহিন জঙ্গলে। বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাকী ভয়ানক সংগ্রাম মুখর দিন কাটতে থাকে সিয়ামের। জঙ্গলের ভেতর হিংস্র জীবজন্তু ও প্রতিকূল পরিবেশের সাথে শুরু হয় টিকে থাকার লড়াই। এক পর্যায়ে লোকালয়ের সন্ধান পায় সিয়াম। তলইং রাজ্যের আদিবাসীরা ডাকাত ভেবে সিয়ামকে বন্দী করে। পরে যোগ্যতা ও বুদ্ধি বলে সিয়াম নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করে। সে রাজ্যের প্রধান সেনাপতিও নিযুক্ত হয়। এক পর্যায়ে রাজ কন্যার সাথে গভীর প্রেমবন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঘটনা জানাজানি হলে বিপদের সম্মুখীন হয় দুজনেই। তলইং রাজ্যের আদিবাসীদের জীবন চিত্র ও ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনার মাধ্যমে বান্দরবানে বসবাসরত মারমা নৃগোষ্ঠীর পূর্ব পুরুষদের শেকড়ের অনুসন্ধানের প্রয়াস চালানো হয়েছে।