আমরা কেউ কখনো না চাইলেও আজ ক্যান্সার আমাদের জীবনের অনিবার্য সত্য হয়ে আছে। ক্যান্সার ও জীবন তাই একেবারে দুই মেরুর দুই বাস্তবতা নয় আমাদের জন্য। তবে এ-ও সত্য যে, আমরা ক্যান্সারকে দমিয়ে, মাড়িয়ে জীবনের পথেই হেঁটে চলেছি। জীবনের জয়ধ্বনি করছি। ক্লান্তি, হতাশা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট-যন্ত্রণার কৃষ্ণকালো মেঘ ঠেলে টুকটুকে লাল সূর্যকেই আমরা স্বাগত জানিয়েছি আমাদের জীবনে। ঘুড়ে দাঁড়িয়েছি বা দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। সেই চেষ্টা করতে করতে আমরা আরও ঘন হয়েছি। উপলব্ধি করেছি সম্মিলিতের শক্তির ক্ষমতাকে। প্রস্তুত হয়েছি শক্তির লয় আরো ব্যাপৃত, বিস্তৃত করতে। আমরা জেনে গেছি আমরাই আমাদের ভরসা, নিরব নির্ভরতা। বুবো গেছি আমাদের একজনের হাসিমুখ, কর্মময় জীবন, হাজারো অন্যমুখে অন্যচোখে স্বপ্ন দেখায় ঘুরে দাঁড়াবার, লড়ে যাবার। লড়াই করে ছিনিয়ে আনা যে জীবন তা আর পুরোনো জীবন নয়। না শরীরে, না মননে। ধরা দেয় নতুন বোধ, অথবা আরো তীব্র হয় নতুন করে পাওয়া এই জীবনকে কাজে লাগাবার তাড়না। তাড়না-তাড়িত আমরা একে একে 'শ হয়ে যাই। জানাই আমাদের কথা। ডাক দেই অন্যদেরও। সাড়া মেলে। আমরা লিখি আমাদের ক্যান্সার জার্নি। লিখতে লিখতে কাঁদি, ভালোবাসায় সিক্ত হই। হারানোর বেদনায় ক্ষত-বিক্ষত হই। লড়াইয়ের ময়দান ফিরে দেখতে খুব অস্বস্তি হয়। তবুও আমরা দমে যাই না। আমরা থামি না। মনে পড়ে হারানো স্বজন, বন্ধুর মুখ। তবুও আমরা কলম থামাই না। আশা দিতে চাই আমরা। বলতে চাই, কোনো বিপর্যয়ই যেন আমাদের থামিয়ে দিতে না পারে। আমার যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারি। অন্যদের বলতে পারি, আমরা আছি 'এখানেই থেমো না'।