কুরআন কারীমের অসংখ্য আয়াত ও অগণিত হাদীস শরীফ প্রমাণ করে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য এবং তাঁর তালীম ও সুন্নাতের অনুসরণই মানবজাতির পূর্ণ ইসলাহের অব্যর্থ ব্যবস্থাপত্র এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বিক সাফল্যের চাবিকাঠি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অনুসরণ-অনুকরণকে কেবল নামায, রোযাসহ কয়েকটি ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করে। পরস্পর লেনদেন ও আচার-ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের দিকনির্দেশনা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষাদীক্ষাকে দ্বীনের কোনো অংশ মনে করে না এবং মনে করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে দেখা যায়, অনেক মুসলমান নামায-রোযার বিচারে ভালো দ্বীনদার। কিন্তু লেনদেন, চলাফেরা, উঠাবসা ও যাবতীয় জীবনাচারে গাফেল ও অনুভূতিহীন। তাই ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য তারা কলঙ্কের কারণ হয়। এর বড় কারণ হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষা থেকে অজ্ঞতা এবং তাঁর আদর্শ ও সুন্নাত থেকে উদাসীনতা। আল্লাহপাক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উত্তম আদর্শরূপে প্রেরণ করেছেন এবং মানবজাতিকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে সর্ববস্থায় এবং সর্বকালে ইবাদত, মুআমালাত ও মুআশারাতে তাঁর আদর্শ অনুযায়ী নিজেও প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অন্যদেরকেও গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। কুরআন মাজীদের আয়াত لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ -এর এটাই মর্ম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাত ও জীবনাদর্শ এ বিবেচনায় যেন কুরআনের আমলীরূপ। এজন্য সর্বযুগে উলামায়ে কেরাম আরবী, ফার্সী, উর্দু ও সব ভাষায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শামায়েল ও গুণাবলীকে সংক্ষেপে ও বিশদভাবে স্বতন্ত্র পুস্তিকা ও বইয়ে সংকলন করেছেন। যেগুলোকে পুরো নববী শিক্ষার সারনির্যাস বলা যায়।