একই সময়ে কারো প্রশান্তি আর কারো অশান্তিক্লিষ্ট জীবনকেই প্রবচনে 'কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ' নামে প্রচলিত আছে। মানুষের জীবনে এই বিপরীতমুখী বিপন্ন সময়ে সাধু-অসাধু তথা মানবিক-অমানবিক এই বৈপরীত্যচরিত্র চিহ্নিত হয়ে যায়। সুযোগসন্ধানী মানুষই বিপন্ন সময়কে পণ্য করে- এরা পাশবিক, অমানুষ। আর মানবিক মানুষ উজ্জীবিত হয় মানবতার সপক্ষে। মানুষের এই বিমিশ্র আচরণ-প্রবণতা কি শুধুই বাঙালি সমাজে, না অন্য সমাজেও দেখা যায়? এর অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আছে বর্তমান গল্পগ্রন্থে। প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে, স্বদেশে বাঙালি আর বিদেশে বাঙালি নিয়ম শৃঙ্খলা মান্যতায় একই চারিত্রে বিচার্য? না, তা নয়। এর সদুত্তোরের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যাবে এই গল্পগ্রন্থে। চরিত্র-চিত্রণেও এখানে আছে শ্রদ্ধেয়-অশ্রদ্ধেয়, পাঙ্ক্তেয়-অপাঙ্ক্তেয়, দেশপ্রেমী-দেশদ্রোহী, সারল্যে- কৌটিল্যে, কৌলিন্যে-ক্লেদার্থে ক্রিয়াশীল নানা মানুষের মুখ ও মুখোশ। এদের নিয়েই সম্মিলিত সুখ-সন্ধিৎসু কথাকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন প্রবাসী লেখক চৌধুরী শামসুদ্দীন- সর্বোপরি স্বার্থান্বেষী, সর্বনাশী সকলেরই হৃদয়ে মানবিক মননবিকাশী পৌষপার্বণ প্রোজ্জ্বল হওয়ার উন্মিলিত আলোর উজ্জীবনপ্রয়াস ও আহ্বান আছে এর মানবিক গল্পগুলোতে।