সন্তান মানুষ না হলে তাঁদের একমাত্র টার্গেটই থাকেÑ বাবা এবং মায়ের সম্পত্তি। ‘ত্রি-অবধি’ উপন্যাসে দেখানো হয়েছে, মূল চরিত্র ইশরাকের একদম শূন্য থেকে শুরু করা কষ্টার্জিত অর্থ সম্পদ পরবর্তী দুই পুরুষ ইয়াসির এবং আহনাফ অনায়াসে ভোগ করতে পারে। প্রথমজনের মতো তাদের কারো জীবনে অর্থের কষ্ট হয় না। পিতার কষ্টার্জিত অর্থ-সম্পদের উপর নির্ভরশীল পরবর্তী বংশধর, বসে বসে হেসে-খেলে নিশ্চিন্তে আয়েশি জীবনযাপন করে যায়। কষ্ট করে নিজে আর কোনো অর্থ-সম্পদ অর্জন করায় তারা কেউ আর আগ্রহী থাকে না। উপন্যাসটিতে সন্তানের প্রতি বাবা-মায়েরও উদাসীনতা দেখতে পাওয়া যায়। ভুল প্যারেন্টিংয়ের করাল গ্রাসে নিজের সন্তান মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এমন পর্যায়ে সঠিক পথপ্রদর্শনকারীর অভাবে সে সন্তান নিজেকে এমনভাবে ভুল পথে পরিচালিত করে যে সে তার সমস্ত জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে শুধু ভুলই করে যায় আর যার ফলশ্রুতিতে নিজের জীবনের সাথে সাথে সে তার সন্তান আহনাফের জীবনও ধূলিসাৎ করে দেয়। প্রথম পুরুষের কষ্টার্জিত অর্থ-সম্পদের উপর নির্ভরশীল পরবর্তী বংশধরদের কেউ তেমন কোনো যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনি যে পূর্বপুরুষের সম্পদ ধরে রাখবে! দেখা গেছে সততা আর কঠোর শ্রমের বিনিময়ে প্রথম পুরুষের যে সাফল্য অর্জিত হয়েছিল, তা কেবলমাত্র সুষ্ঠু প্যারেন্টিংয়ের অভাবে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সর্বোচ্চ তিন পুরুষ পর্যন্ত টিকেছিল তাঁর সমস্ত অর্থ-সম্পদ এবং বংশপরিচয়। গ্রাম, শহর, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তÑসব বিত্তের খুব চেনা চারপাশের জীবনকে এক সুতায় গেঁথে বাস্তবিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কিছু কাল্পনিক চরিত্র সৃষ্টি করে উপন্যাসের অবয়বে ভাষারূপ দিয়েছি। মানুষের স্বপ্ন, আশা-আকাক্সক্ষা, চাওয়া-পাওয়া, না-পাওয়ার বেদনা নিনাদিত উপন্যাস ‘ত্রি-অবধি’।