নৈমিত্তিকতার জালে বন্দি মানুষের তুলনায় পর্বতারোহীদের জীবন বেশ বর্ণাঢ্য। দূর থেকে ঠিকরে আসা সে জীবনের ঔজ্জ্বলতা, বাঁধা পথের পথিকদের দীর্ঘশ্বাসের কারণ। অকুতোভয় পর্বতারোহীদের রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চারের বর্ণনায় ঠাসা থাকে পর্বতারোহণ সাহিত্য। পাঠক গোগ্রাসে গেলেন সেসব, আর পর্বতারোহীদের বন্দনা বাড়ে। পর্বতারোহণ সাহিত্যে অভিযাত্রীর শারীরিক, মানসিক সক্ষমতার প্রান্তে উপনীত হয়ে শৃঙ্গ আরোহণ করার গল্প ব্যাপৃত থাকলেও অনুক্ত থেকে যায় অভিযানের সময় যাদের পেছনে রেখে আসতে হয়, সেই প্রিয় মানুষদের গল্প। পৃথিবীর দুর্গমতম এসব ভূখণ্ডে আসতে নিজেদের ত্যাগের কাহিনি উচ্চকন্ঠে ধ্বনিত হলেও না বলা রয়ে যায় পর্বতের ওপাশের ছায়ায় দাঁড়ানো প্রিয়জনদের হাজারো বিসর্জনের কথা। এসব মানুষের গল্প স্থান পায় না পর্বতারোহণের বইয়ে কিংবা আলোচনায়। পর্বতারোহীদের অপ্রিয় এই প্রসঙ্গকে অবলম্বন করে এই বইয়ের অবতারণা করেছেন মারিয়া কোফি। কিংবদন্তি ব্রিটিশ পর্বতারোহী জো টাস্কারের এই প্রেমিকা হিমশীতল পর্বতে হারিয়েছেন নিজের ভালোবাসার মানুষকে। সান্ত্বনাহীন সেই শোকের সাথে যুঝতে যুঝতেই হাতে তুলে নিয়েছেন কলম, লিখেছেন ‘Where The Mountain Casts Its Shadow: The Dark Side of Extreme Adventure’। এরই অবলম্বনে ‘পর্বতারোহণের অন্তরালে’ শিরোনামে বাংলায় বইটি অনুবাদ করেছেন পর্বতারোহী ফরহান জামান। বইটি পড়তে গিয়ে ‘যে-আঁধার আলোর অধিক’-নামক শব্দগুচ্ছের সাথে আক্ষরিক অর্থেই পরিচয় ঘটবে বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের!