আমার বন্ধু-সহকর্মীদের অনেকেই আমাকে আমার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে উৎসাহিত করেছেন। আমি কখনই এ ব্যাপারে সিরিয়াস ছিলাম না, কাজের ব্যস্ততায় নিজেকে নিয়ে লেখার মতো অবসরও আমার ছিলো না। ২০২০ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ অতিমারি ছোবল দেয়ার পর সবার মতো আমিও বাসা থেকে অফিস করা শুরু করলাম। দেশে লম্বা সরকারি ছুটি শুরু হলো। যে আমি, কর্মজীবনে সর্বক্ষণ কাজে ডুবে থাকতাম ‘অতিমারির’ কারণে নিজ গৃহে অবরুদ্ধ হয়ে সময় কাটাতে বাধ্য হলাম। এতো অবসর আগে কখনই পাইনি। চিরাচরিত জীবনযাত্রা কিছুটা সময়ের জন্য হয়ে পড়লো স্তবির। ধীরে ধীরে শুরু হলো নতুন এক দুনিয়ায় নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার অনুশীলন। ই-কমার্সের সাথে পরিচিতি থাকলেও প্রাত্যহিক জীবনে তখনও এর তেমন কোন প্রভাব ছিলো না। চোখে দেখে,হাতে নিয়ে কেনাকাটা করাটাই ছিলো অভ্যাস। ইউটিউব,নেটফ্লিক্সে ডক্যুমেন্টারী আর মুভি দেখার জন্য এর আগে সময় বরাদ্দ ছিলো খুবই কম। এবার, বিশ্ব বিখ্যাত মুভিগুলির পাশাপাশি প্রতিদিন নতুন নতুন মুভি দেখা, দেশি-বিদেশি টকশোতে উদ্ভাবনী ধারণা আর তুমুল বিতর্ক শোনার জন্য অফুরন্ত সময় বের করা সম্ভব হলো। ‘রকমারি’তে অর্ডার করে আমি আর আমার স্ত্রী নার্গিস আক্তার আনতে শুরু করলাম না পড়া অজস্র বই। পুরো দেয়াল জুড়ে বইতে ঠাঁসা আলমারিতে নতুন বইয়ের জায়গা দেয়া কষ্টকর হয়ে উঠলো। আমাদের সংগ্রহের সব বই পড়া ছিলো না। এবার নতুন-পুরাতন বইগুলি পড়ার সুযোগ তৈরি হলো। অনলাইন শপ ‘চালডাল’ হয়ে উঠলো ঘরবন্দী আমাদের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার অবলম্বন। ‘দারাজ’ হয়ে গেলো অনলাইনে প্রোডাক্ট দেখে দেখে কেনাকাটার নতুন অভিজ্ঞতা।