নতুন প্রজন্ম নতুন ভাবনার অবতারণা করবে এটাই স্বাভাবিক, এটাই প্রত্যাশিত। তবে সে জন্য প্রয়োজন প্রজ্বলিত মন। তাহলেই ভাবনা ও চিন্তাগুলো হবে সুশোভিত ও সুকুমার। শেখ ফয়সল আমীন আমাদের যাপিত জীবনের নানা প্রসঙ্গ বিশ্লেষণ করেছেন আলোকিত চেতনা ও মননে। স্বদেশ-সংলাপ ও বিশ্ববীক্ষণ সেসব বক্তব্যের অনুপুঙ্খ সংকলন। লেখক মনুষ্যত্ববোধের সংরক্ষণ বিষয়ক প্রয়োজনীয়তার দাবি তুলেছেন। বর্তমান অস্থির সময়ে বিষয়টি ভাবনার খোরাক জোগায়। বিত্তের দারিদ্র্যের বাইরেও যে চিত্ত ও বোধের দারিদ্র্য একটি স্বীকার্য অস্তিত্ব এবং সেটির আশু-সংক্রান্তি প্রয়োজন তা-ও উঠে এসেছে সুনির্দিষ্ট লেখায়। সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ বিষয়ে বইটিতে সতর্কতা যেমন আছে ঠিক তেমন আছে নির্মল সমাজের একটি রূপরেখা। বাংলাদেশের সমকালীন অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও রাজনৈতিক বিবর্তনসহ বহুমাত্রিক আলোচনা বইটির ‘স্বদেশ-সংলাপ’ অধ্যায়টিকে ঋদ্ধ করেছে। আছে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার নানাবিধ প্রভাবক-প্রসঙ্গ। ‘চেতনা ও প্রেরণা’ অংশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু পরিবার বিষয়ে প্রমিত ইতিহাস-চর্চা ও অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। সংঘাতপূর্ণ এই বিশ্বব্যবস্থায় শান্তি ও সদাচার, নিরাপত্তা ও ন্যায্যতার প্রত্যাশায় লেখকের যুক্তিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া ও প্রস্তাবনা সংবলিত ‘বিশ্ববীক্ষণ’ অধ্যায়টি বিশ্লেষণধর্মী ও তথ্যবহুল। এ ছাড়া, ‘সাহিত্য-সংস্কৃতি সমাচার’ অধ্যায়টিতে সম্মিলন ঘটেছে ভিন্নমাত্রিক সাহিত্য-দর্শন ও সাহিত্য-সংস্কৃতি আশ্রিত মুক্তির মত ও পথের। আগামীর বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক অভিযাত্রার একটি পথরেখা পাওয়া যায়—এটিই বর্তমান গ্রন্থের মূল আকর্ষণ।