সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে ভারসাম্য, শৃঙ্খলা, উন্নতি ও অগ্রসরতা অব্যাহত রাখতে শিষ্টাচারের গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো জাতিকে সুসভ্য ও সফল রূপে প্রতিষ্ঠিত হতে এর বিকল্প নেই। শিষ্টাচার হচ্ছে ভদ্র, মার্জিত, পারস্পরিক সৌজন্যতা, মূল্যবোধ ও রুচিসম্মত আচরণ। আমাদের বিদ্যমান অশান্ত সমাজে শান্তি ও স্থিতি আনতে হলে সবাইকে শিষ্টাচারসম্পন্ন হতে হবে। কারণ শিষ্টাচারসম্পন্ন মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করে না। শিষ্টাচার মানুষকে সংযমী ও বিনয়ী করে তোলে। এমন মানুষকে সবাই শ্রদ্ধা করে। ইসলামেও আদব শিষ্টাচার ও সৌজন্যতাকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন। শিষ্টাচারের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন, “নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ।” (আবু দাউদ : ৪৭৭৬)। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, “তুমি আদব ও শিষ্টাচার অন্বেষণ কর। কারণ আদব হলো বুদ্ধির পরিপূরক, ব্যক্তিত্বের প্রমাণ, নিঃসঙ্গতায় ঘনিষ্ঠ সহচর, প্রবাস জীবনের সঙ্গী এবং অভাবের সময়ে সম্পদ।” (ইসবাহানি, মুনতাখাব; সাফারিঈনি, গিযাউল আলবাব : ১/৩৬—৩৭)। সমাজে শিষ্টাচারের অভাব নৈতিক অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে। সমাজজীবন হয়ে ওঠে অশান্তিপূর্ণ। নানা কদর্যতা, অন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ফলে সমাজে বসবাসকারী মানুষরা ভোগে অস্তিত্বের সঙ্কটে। শিষ্টাচারহীনতা একটি দেশ ও জাতির উন্নয়নের অন্তরায়। এ উপলব্ধি থেকে মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ‘সদাচার শিষ্টাচার আদব কেতা’ গ্রন্থটি রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। তিনি সুন্দর আচরণ প্রকাশের অনন্য কলাকৌশল হিসেবে শিষ্টাচারকে নানা আঙ্গিকে নানা রূপে আলোকপাত করেছেন।