চারিদিক অন্ধকার করে কালো মেঘে ছেয়ে আছে আকাশ, ধুলোবালি তার শরীর এলিয়ে দিচ্ছে বাতাসের গায়ে। এরমধ্যে একজন মানুষ দাঁড়িয়ে পৃথিবীর আদিম পাপ করার পরিকল্পনা করছে। মাঝরাতে এলিফ্যান্ট রোড জনশূন্য হয়ে এলে রাস্তাটাকে নাইটগার্ডের সুন্দর বলে মনে হয়। তিনি প্রতিদিন নিজেকে প্রশ্ন করেন, পৃথিবীর সব অসুন্দর কি তাহলে মানুষের সৃষ্টি? মিছিলে শত শত মানুষের সাথে হাতে হাত রেখে, একই স্লোগানে গলা মিলিয়ে; একজন মানুষ নিজেকে ভাবছেন একা। কারণ তার কাছে একা মানে মানুষের থেকে দূরে সরে যাওয়া নয়; একা মানে সকলের মধ্যে থেকেও—একা। আমি জানতে চেয়েছি একজন মানুষ আসলে কতটা একা হতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একজন ঝাড়ুদার; যখন সমস্ত শহর বাতি নিভিয়ে ঘুমায়, স্বপ্ন দেখে; তখন তিনি এই শহরের অনেক ঘটনার সাক্ষী হোন নিয়মিত। মাঝরাতে পরীবাগের চায়ের টঙে বসে তিনি আমাকে একটা গল্প শুনিয়েছিলেন। গল্পটা পাপের, এবং শেষ পর্যন্ত শোনে শেষ করা যন্ত্রণার। এই গল্পটা তিনি চিনচিনে ব্যাথা নিয়ে উনচল্লিশ বছর ধরে গোপন রেখেছেন নিজের মধ্যে। আমাকে বলতে পেরে কি হালকা হয়েছেন? আমি মনে করি, তার উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ সত্য। কারণ সবসময় সত্য বলতে পারে দুই শ্রেণির মানুষ। অলি-আউলিয়া কিংবা ভয়ঙ্কর ক্রিমিনাল যারা। এই দুইশ্রেণির বাইরে বাকিরা সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে কথা বলে। তিনি দ্বিতীয় ধরণের। আমি উঠে পড়ার সময় তিনি চোখে ক্রীতদাসের ক্লান্তি নিয়ে অনুরোধ করেছেন তার এই গল্পটা যেনো আমি গোপন রাখি। কিন্তু আমি গল্পটা জানাতে চাই। চাই যন্ত্রণাটা ছড়িয়ে পড়ুক, সকলের মাঝে।