গীতিকবি ও সুগায়ক খলিল আহমদ একজন স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বভাবজাত শিল্পী। তাঁর একগুচ্ছ গীতিকবিতার সংকলন এই গানের ভালোবাসা। বিচিত্র বিষয়ে গান রচিত ও গীত হতে পারে, কিন্তু সবচেয়ে প্রচলিত ও মন্ময় বিষয়ের নাম ভালোবাসা। অন্যদিকে, গীত, নৃত্য ও বাদ্য সহযোগে যে সংগীতের সৃষ্টি তা কেবল মোহবিস্তারী বিচিত্র যন্ত্রধ্বনিই নয়, তার জনপ্রিয়তম রূপ তরঙ্গিত গীতিময়তার অপরূপ ব্যঞ্জনাও বটে। বিষয় ও বয়ানের যোগফলে তার বাণীরূপ নানা ধরনের রসানুভূতির সৃষ্টি করে। রস যে সব ধরনের শিল্প সৃষ্টির মূলে সক্রিয়, এ কথাটি বলেছেন মূলত ভরত মুনিসহ প্রাচীন্ন অলংকারশাস্ত্রবিদেরাই। যে বাক্যে রস আছে তাই 'কাব্যম্' বা কবিতা। সেই কবিতাই নানা ছন্দে ও সুরে গীত হয়ে গান হয়ে ওঠে। আর এই রসের উৎস নানা কৌণিক মানবিক 'ভালোবাসা'। ভালোবাসার নানা স্তরে অনুরাগ, পূর্বরাগ, বিরাগ, বিরহ, মিলন ইত্যাকার বিচিত্র ভাব বা অনুভাব সক্রিয়। প্রেমিক বা প্রেমিকা অন্যের প্রেমে পড়ে অথবা নিজের ভেতরেই দুই বিপরীত সত্তার অস্তিত্বকে কল্পনা করে এই গীতিবয়ান তৈরি করতে পারে। স্বভাব-গীতিকবি খলিল আহমদও তেমনটি করেছেন। দরাজ কণ্ঠের এই গীতিকবি শিল্পী হিসেবেও শনাক্তযোগ্য গায়কির অধিকারী। এমনটি সচরাচর দেখা যায় না। মানবিকতা, নান্দনিকতা, প্রেম, ভক্তি, প্রকৃতি ও আত্মবীক্ষণে সিদ্ধ ও স্বতন্ত্র এই সংগীতস্রষ্টার শিল্পযাত্রা জয়যুক্ত হোক।