মানুষের জীবন এক অদ্ভুত আধার। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, মান-অভিমান, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা, বিচ্ছেদ ও আনন্দের মতো হরেক রঙের উপকরণ দিয়ে যার ভেতরটা ঠাসা। বিজ্ঞজনেরা যাকে 'জীবনবোধ' বলে আখ্যায়িত করেছেন। 'মেঘের কোলে রোদ' উপাখ্যানটিও গভীর এক জীবনবোধেরই কথা বলে। গল্পটা মেস লাইফের। যেখানে ঢাকার মতো একটি ব্যস্ত শহরে অজপাড়াগাঁ থেকে উঠে আসা গুটি কয়েক ছেলেপেলেদের জীবনের নানামুখী অভিজ্ঞতার চিত্রায়ণ ঘটেছে। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, মান-অভিমান, খুনশুটি—যেন এক অলিখিত সংসার পেতে বসেছিল তারা। কিন্তু পৃথিবীর সবকিছুই যে অস্থায়ী, নশ্বর—কালপ্রবাহে বিচ্ছেদ ও বিরহবোধ শেষপর্যন্ত তাদের সে উপলব্ধি জুগিয়েছে। গল্পটা একেবারেই অতি সাধারণ একটি গল্প। জীবনবোধের গল্প। তবুও আমার বিশ্বাস, পাঠক তাতে অসন্তুষ্ট হবেন না। বরঞ্চ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পাঠকমাত্রই এ গল্পের ভিন্ন কোনো মানে, ভিন্ন কোনো দর্শন আবিষ্কার করবেন। তারা উপলব্ধি করবেন, জীবনকে আমরা যতটা সহজ ভাবি, জীবন আসলে ততটা সহজ নয়। প্রতিটি পতনোন্মুখ মুহূর্তই আমাদের কিছু না কিছু দিয়ে যায়। নিয়েও যায়। তবে এই নেই মানেই কি না-থাকা? উঁহু, ওই যে মনে নেই? কবি বলেছেন, মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে। হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে। কীভাবে আসে? চলুন, সে উত্তর নাহয় বইয়ের পাতাতেই খুঁজে বের করি!