ছিলেন ছাত্র আন্দোলনের কর্মি। ১৯৭২ সালে যুক্ত হন সাংবাদিকতায়। বালাগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, '৭০ এর নির্বাচন '৭১ এর অসহযোগ এবং মুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্তি। ১৯৮০ থেকে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কমিউনিস্ট রাজনীতির সূত্র ধরেই বাম রাজনীতি, কৃষক ও খেতমজুর আন্দোলন, চা শ্রমিক, ধাঙ্গড়, দোকান শ্রমিক, নানকার, ভাসানপানি, সিমিস্টার সাইপাম আন্দোলন, নারী আন্দোলন, স্বদেশি আন্দোলন- সব নিয়েই লিখেছেন, বই করেছেন। '৮০ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জাতীয়ও আঞ্চলিক পত্রিকায় একটানা লিখেছেন। বিশেষ করে সচিত্র সন্ধানী'তে তাজুল মোহাম্মদের নিয়মিত কলাম 'একাত্তরের গণহত্যা' ব্যাপক পরিচিতি দিয়েছে। সে সময়ের বাস্তবতায় সেটি ছিল দুঃসাহসী কর্ম। এটি গ্রন্থবন্ধ হয় ১৯৮৯ সালে। আসে খ্যাতি। সেই সঙ্গে দশক জুড়ে চলে আসা স্বাধীনতা বিরোধীদের হুমকি ধামকি প্রাণনাশের প্রচেষ্টায় পরিণত হয়। এসবকে বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে ১৯৯৪-৯৫ সালে ৯ মাস গবেষণা করেছেন বিবিসির হয়ে 'দ্য ওয়ারক্রাইমস্ ফাইল' নামক বিশ্ব জুড়ে সাড়া জাগানো প্রামাণ্যচিত্র বিনির্মাণের এসময় একাধিকবার মৃত্যুর সদর দরজা অবধি ঘুরে এসেছেন। অবশেষে প্রাণরক্ষার তরে ব্রিটেন গমন। পায়ে থিতু হন কানাডায়। ৪৪ বছর চলছে। বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে গবেষণা করছেন। প্রকাশিত হয়েছে ৮০টি গ্রন্থ। '৭০ বছর বয়সেও বিরামহীনভাবে কাজ করছেন। তিনি নিজে বলেন, 'দেশের অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা এবং সহযোগিতাই আমাকে কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়। সাব্বির সৌরভ মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র
তাজুল মােহাম্মদ সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ১৯৭২ সালে। আর মুক্তিযুদ্ধ গবেষণার কাজে হাত দেন ১৯৭০ সালে। তখন থেকেই লেখালেখি করছেন এ বিষয় নিয়ে। ১৯৮৯ সালে। প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয় “সিলেটে গণহত্যা'। এ গ্রন্থের সুবাদে ব্যাপক পরিচিতি। সিলেটের যুদ্ধ কথা’-সহ আরও চার-পাঁচটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯৪ সাল অবধি। সিলেটের গণহত্যা নিয়ে ব্যাপক আলােচনার কারণেই হয়তাে দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। ব্রিটেনের টুয়েন্টি টুয়েন্টি টেলিভিশনের। যােগাযােগ করে সে টিভি কর্তৃপক্ষ। নিয়ােগ করে যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে গবেষণার কাজে। ৯ মাসের গবেষণার ফল হিসেবে নির্মিত হয় ‘দা ওয়ার ক্রাইম ফাইল’ নামক প্রামাণ্য চিত্র। যা সাড়া জাগিয়েছিল বিশ্বের দেশে-দেশে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল বাংলাদেশে, ব্রিটেনে, যুক্তরাষ্ট্রে। এর আগেই তাজুল মােহাম্মদের ওপর হুমকি আসে মৌলবাদী, যুদ্ধাপরাধী এবং জামায়েত শিবিরের পক্ষ থেকে। এক সময় দেশ ছেড়ে পালাতে হয় তাকে। দেশের বাইরে থেকেও আন্দোলন করেছেন তিনি। বসতি গড়েছেন কানাডায়। বছরে কয়েক মাস দেশে অবস্থান করে চালান গবেষণাকর্ম। বাকি সময় কানাডায় বসে লেখালেখি করেন। গ্রন্থ। প্রকাশিত হয়েছে ষাটের অধিক। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণার জন্য লাভ করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। পেয়েছেন ইংল্যান্ডের টাওয়ার হ্যামলেটস মেয়র অ্যাওয়ার্ডসহ বেশ কিছু সম্মাননা। গবেষণা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন যুবকের ন্যায়। তাজুল মােহাম্মদের জন্মস্থান মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায়। পরে থিতু হয়েছিলেন সিলেট শহরে।