আত্মীয়দের প্রথম হক হলো, তাদের সাথে সম্প্রীতি ও সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সদয় আচরণ করা। আত্মীয়দের ক্ষমা করা ও দয়া দেখানো ইসলামের অন্যতম মৌলিক শিক্ষা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, যুগের পালাবদলে মানুষের চিন্তা ও চেতনা পালটে যাচ্ছে। মানুষ নিজেকে উচ্চবিত্ত আধুনিক মনে করতে শুরু করেছে। ফলে দরিদ্র আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখতে তারা পছন্দ করছে না—যদিও তারা হয় আপন ভাইবোন! পেশা ও বিত্ত আজ আত্মীয়তার লাইসেন্স হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে বিত্তহীন সে আত্মীয় হওয়ার অযোগ্য! বিত্তবানরা মনে করছে, তার সবচেয়ে বড় সম্মান হলো ধনী আত্মীয়দের সাথে ‘সম্পর্ক’ রাখা, চলাফেরা করা। অন্য অর্থে, আত্মীয়তা আজকাল অফশনাল হয়ে গেছে। এজন্যই আজ আমরা রক্তের সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের সাথে ‘তিক্ততা’ এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। শত্রুতা, ঝগড়া, মারামারি থেকে শুরু করে ছোটখাটো তুচ্ছ বিষয়েও নিকটাত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা হচ্ছে। পরিলক্ষিত হচ্ছে আত্মীয়তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির অভাব। একে অপরের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করা, ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে কাজ করা ছিল মুসলমানদের মৌলিক গুণ, যা আমরা হারিয়ে ফেলতে চলেছি। ধীরে ধীরে আমাদের সমাজ ভেঙে পড়ছে। সত্যি বলতে, প্রকৃত জীবন এর নাম নয়; আত্মীয়তা রক্ষা ও সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকা এবং তাদের দোয়া নেওয়া হলো আসল জীবন।