১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর কাছে খবর এলো, পাকিস্তান সরকার সেখানে অবস্থানরত বাঙালিদের আটকে রেখেছে। বন্দিশিবিরে তাঁদের ওপর দিনের পর দিন অমানবিক নির্যাতন করছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে আসছেন। স্বভাবতই বঙ্গবন্ধু চুপ করে বসে থাকতে পারলেন না। তিনি তাঁদের মুক্তির জন্য নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করলেন। বিশ্বজনমত গড়ে তুলতেও সমর্থ হলেন। কিন্তু ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ব্যাপারে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তবু বঙ্গবন্ধু শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বারবার বলছিলেন, একাত্তরে ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালির কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ তিনি করতে পারবেন না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে। কিন্তু সদ্য স্বাধীন একটি দেশের পক্ষে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে পরাস্ত করার কোনো কৌশলই তখন কাজে আসেনি। তাই তিনি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি থেকে সরে এসেছিলেন। বলা যায় সরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারপরও তিনি প্রমাণ করেছিলেন, তিনি বাঙালির সত্যিকারের অকৃত্রিম হৃদয়ের বন্ধু- বঙ্গবন্ধু। কিন্তু কিভাবে? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতেই পড়তে হবে পাকিস্তানে আটক বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু।