কোভিড মহামারী এড়াতে শহরজুড়ে লকডাউন। মাঝরাতে এক কাপ চায়ের খোঁজে রাস্তায় হাঁটছেন আখতারুজ্জামান। রাস্তার: আলো ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে প্রায়, গুমোট হয়ে আছে চারপাশ। কতক্ষণ হেঁটেছেন খেয়াল নেই। হঠাৎ একটা মাইক্রোবাস পেছন থেকে জোরে ব্রেক কষতেই তার সম্বিত ফিরল। ভয়ে জমে গেলেন আখতারুজ্জামান। আরেকটু হলেই মাইক্রোর চাকার নিচে পড়তেন। এই অন্ধকার রাস্তায় হেডলাইট নিভিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে কোন বেআক্কেল? : “পাগলের মতো গাড়ি চালান কেন?” একটু ধাতস্থ হয়ে চিৎকার করে উঠলেন তিনি। মাইক্রোবাসের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন। “গাড়ির হেডলাইট কোথায়? কার না কার গায়ের ওপর গাড়ি উঠে যাবে! কোন কমন সেন্স নাই।” : কোন উত্তর এলো না। গাড়ি থামিয়ে দিয়েছে ড্রাইভার। ভেতর থেকে ক্লিক করে একটা শব্দ হলো। সম্ভবত লক খোলার আওয়াজ। পরক্ষণেই খুলে গেলো ড্রাইভিং সিটের দরজা। ভেতরে গান বাজছে, অন্ধকার সুনশান রাস্তায় একমাত্র শব্দের উৎসঃ ‘এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু।। কোন রক্তিম পলাশের স্বপ্ন মোর অন্তরে ছড়ালে গো বন্ধু…’ : গাড়ির দরজা খুলে দিয়েছে ড্রাইভার। অন্ধকারে কেউ কারও মুখ দেখতে পাচ্ছে না। সেই অবস্থাতেই আখতারুজ্জামানের কাঁধে হাত রাখল লোকটা, কানের কাছে মুখ এগিয়ে আনল সন্তর্পণে। তারপর ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলোঃ : “আখতারুজ্জামান, আপনি কি একটু চা খেতে চান?”
ওয়াসি আহমেদে পেশায় চিকিৎসক। বই লেখা, বই পড়া, বই সংগ্রহ করা এবং বইপত্র নিয়ে আলোচনায় মেতে থাকা- জীবনের এই বৈচিত্র্যকে উপভোগ করেন সবচেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত সংগ্রহে বইয়ের সংখ্যা ১৫ হাজারের অধিক। হারুকি মুরাকামি, পাওলো কোয়েলহো, নিল গেইম্যান, জেমস রলিন্স, শার্লি জ্যাকসন, জো নেসবো-সহ পছন্দের লেখকদের বেশ কিছু বই অনুবাদ করেছেন। সম্পাদনা করেছেন একাধিক গল্প সংকলন। প্রকাশিত মৌলিক গ্রন্থ- 'আঁধারের গহীন নিরুদ্দেশে', 'যে বাক্য অশ্রুত অন্ধকার', 'হান্নান বোতলে পরী আটকে রাখে', 'মৃতদের স্মরণে সমবেত প্রার্থনা', 'আখতারুজ্জামান একটু চা খেতে চান'।