বর্তমান সময়ে আরব বিশ্ব ও অন্যান্য মুসলিম দেশের মানুষ ভয়ংকর এক সহিংসতার মধ্যে বসবাস করছেন। যখন প্রশ্ন ওঠে, কেন এমনটি হচ্ছে, তখন থেকেই তা হচ্ছে। কুরআনের বিশেষ বিশেষ আয়াতগুলোর অর্থ ও আল্লাহর নির্দেশাবলি অনুসরণের প্রশ্নে মুসলিমদের মধ্যে প্রায়শ মতভেদ লক্ষ করা যায়। এ ধরনের মতভেদ, সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে ধর্মের মৌলিক বিষয়ে যে মতভেদ রয়েছে, তার তুলনায় যৎসামান্য। সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে বিরাজমান মতভেদ সমগ্র মুসলিম সমাজের সর্বত্র এক বিশেষ সাংস্কৃতিক সিলমোহর লেপন করছে। সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে প্রতিনিয়ত রক্তপাতের মূল কারণ হিসেবে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে দায়ী করা হয়। রক্তক্ষয়ী এসব সংঘর্ষের পেছনে সুন্নি সৌদি আরব ও শিয়া ইরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বিদিতা নিহিত রয়েছে। তথাকথিত, ‘ইসলামি রাষ্ট্রের’ (আরবি পরিভাষায় ‘দায়েশ’) আবির্ভাবে হাজার হাজার সুন্নি তরুণ মুসলিম সিরিয়া গমন করেন নতুন খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তাদের লক্ষ্য সেখানে শরিয়াহ্ আইন কঠোরভাবে কার্যকর করা। সারা বিশ্বে, বিশেষত মুসলিম দেশগুলোতে, বিপুলসংখ্যক মানুষ ইসলামের নামে দায়েশের হিংস্রতা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ ধরনের হিংস্রতার শিকার হন খ্রিটান ও ইয়াজিদিদের মতো অমুসলিমগণ। এসব ঘটনা সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে। বিশেষ করে, শিয়াদের ওপর এ জাতীয় সহিংসতা অধিক পরিমাণে চালানো হয়। দায়েশদের মতে, শিয়া সম্পদায়ের মানুষেরা ধর্মদ্রোহী ও প্রতারক। ইসলাম বিশ্বের দ্রুততম প্রসারমাণ ধর্ম। প্রধানত, মরক্কো ও মৌরিতানিয়ার আটলান্টিক উপক‚ল থেকে নিয়ে ভারতের বৃহদাংশ ব্যতিরেকে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত এ ধর্মের অনুসারীরা সুবিস্তৃত। উত্তর দিকে মধ্য এশিয়া থেকে রাশিয়ার কিয়দংশ এবং দক্ষিণে সাব-সাহারার আফ্রিকা পর্যন্ত ইসলামের অস্তিত্ব বিদ্যমান। এ ছাড়া, অন্যান্য অনেক দেশে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের অবস্থান গড়ে উঠেছে বিশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে অভিবাসন প্রক্রিয়ার কারণে। তবে মুসলিমদের অধিকাংশই সুন্নি। বিশ্বস্ত সূত্রে না হলেও, ধারণা করা হয়, বিশ্বের ১৬০ কোটি মুসলিম জনগণের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সুন্নি মুসলিম। অবশিষ্টদের মধ্যে বেশির ভাগ শিয়া। বিশ্বের মাত্র চারটি দেশে শিয়া সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। দেশগুলো হচ্ছে ইরান, ইরাক, আজারবাইজান ও বাইরাইন। আর, লেবানন একমাত্র দেশ যেখানে সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায় সুন্নিদের তুলনায় সংখ্যায় বেশি। ইসলামি ভূখেন্ডর কেন্দ্রস্থলের বাইরে কোথাও কোথাও শিয়া সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রয়েছে কিন্তু তা সেখানকার মোট মুসলিম জনসংখ্যার হিসেবে খুবই নগণ্য। তারা বণিক শ্রেণি, অথবা অভিবাসী, অথবা ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে ইরানি বিপ্লবের পর শিয়া মতবাদে ধর্মান্তরিত হওয়া মুসলিম। শিয়া সম্প্রদায় মুসলিমদের মধ্যে সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে অবহেলিত ও প্রান্তিক স্তরে পর্যবসিত হয়েছে। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত তারা ‘তাকিয়া’ নামে এক বিশেষ মতবাদের আশ্রয় গ্রহণ করেন, যার মাধ্যমে তারা তাদের স্বতন্ত্র ধর্মীয় বিশ্বাসকে অন্য মুসলিমদের কাছে প্রকাশ করতেন না নিপীড়ন-নিগ্রহের আতঙ্কে। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নবি (স.)-এর প্রয়াণের পর থেকে ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে বাগদাদে খিলাফত যুগের পতন পর্যন্ত সুন্নি মুসলিম শাসকগণই মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজত্ব পরিচালনা করেন। এ সময়ের মধ্যে খলিফা আলি (রা.) ছিলেন একমাত্র স্বীকৃত শিয়া শাসক। তার পাঁচ বছরমেয়াদি শাসনামলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বাপক গৃহযুদ্ধ। তিনি ৬৬১ খ্রিস্টাব্দে নিহত হন। তবে ঘটনাক্রমে তার হত্যাকারী সুন্নি ছিলেন না। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে আলি (রা.)-এর পুত্র হুসেইন (আ.) যখন কারবালা যুদ্ধে শহিদ হন, তখন শিয়া সম্প্রদায় নিদারুণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে মৌনব্রত অবলম্বন করে রাজনীতি ও পার্থিব ক্ষমতার মোহ পরিত্যাগ করে। তারা আল্লাহর ন্যায়বিচারের ওপর তাদের চ‚ড়ান্ত বিজয়ের ভার তুলে দেন। শিয়া মতবাদের অনেক আচার-অনুষ্ঠান, বিশেষত হুসেইন (আ.)-এর শাহাদতবরণের স্মৃতিচারণামূলক শোকাচারের ভেতর দিয়ে তারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকেন। সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের দীর্ঘ ইতিহাসে শিয়া সম্প্রদায়ভুক্তদের যে নিপীড়ন ও নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। এসবের অনেক নিদর্শনও রয়েছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেখা গেছে, ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেইন শিয়াদের ওপর নির্মাণ দমননীতি চালিয়েছেন। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় শিয়াদের অবস্থান ততখানি অবদমিত ছিল না। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম কয়েক শতকে সুন্নি শাসকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য শিয়া বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এ রকম এক বিদ্রোহের ফলশ্রুতিতে উত্তর আফ্রিকা ও মিসরের ফাতেমি বংশীয়রা বিশাল শিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যারা সুন্নিদের ওপর শাসন পরিচালনা করেন তাচ্ছিল্যসহকারে। এরপর ইরানের সাফাবি বংশীয়রা শিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ষোড়শ শতকে এবং সুন্নি প্রজাদের বলপূর্বক শিয়া মতবাদে ধর্মান্তরিত করেন। ভারতবর্ষে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে অযোধ্যায় নবাবদের শাসনামলে আসাফুদ্দৌলা আশুরা উদ্যাপনের জন্য লক্ষে ‘ইমামবাড়া’ নামে এক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণ করেন। আসাফুদ্দৌলাকে সেই ‘ইমামবাড়া’ প্রাঙ্গণেই সমাধিস্থ করা হয়। লক্ষেতে অনুষ্ঠিত আশুরার শোভাযাত্রায় অগ্রভাগে রাখা হতো হস্ত্রী আরোহীদের একটি দল এবং বিপুলসংখ্যক সুন্নি মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতেন। হিন্দু সম্প্রদায় হুসেইন (আ.)-এর মাধ্যমে মৃত্যুর দেবতাকে সন্ধান করার চেষ্টা করে। মধ্যযুগীয় ফার্সি সাহিত্যের একাধিক দিকপাল যেমন জালাল আল-দ্বিন রুমি (১২০৭-৭৩) ও হাফিজ শিরাজি (১৩১৫-৯০), ছিলেন সুন্নি মুসলিম। কিন্তু তারা সাম্প্রদায়িক ছিলেন না। এটি ভাববার বিষয়। তাদের সাহিত্যকর্মে ইসলাম ধর্মীয় অনুষঙ্গের প্রাধান্য থাকা সত্তে¡ও তা বর্তমান ইরানের শিয়া সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডেলে দারুণভাবে সমাদৃত ও প্রভাবিত। তারা যে সুন্নি মুসলিম ছিলেন, শিয়াদের কাছে এটি কোনো বিষয় না। প্রকৃতপক্ষে, সুন্নিবাদ ও শিয়াবাদ ও পরিনিষিক্ত। বিশ্বাস ও মতবাদের ভিত্তিতে সুন্নি ও শিয়াদের যতই ব্যবধান থাকুক না কেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করেন এবং তাদের ওপর আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে যূথবদ্ধভাবে লড়াই করেন। এ গ্রন্থের লক্ষ্য হচ্ছে, ইসলামের ইতিহাসের শুরু থেকে আজ অবধি ইসলামে যে বিস্তর ব্যবধান ও বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে তা ব্যাখ্যা করা। এ বিভাজনকে বুঝতে হবে কীভাবে তা সাম্প্রতিক সময়ে বিবিধ সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুন্নিবাদ ও শিয়াবাদকে দুটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায় হিসেবে চিহ্নিত করার আগে আমাদের সচেতন হতে হবে যে, বিষয়টি যেন খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত¡ দ্বারা প্রভাবিত না হয়। কারণ, ধর্মীয় ‘সম্প্রদায়’ কথাটি খ্রিস্টীয় ধর্মতত্ত¡ থেকে উৎসারিত। খ্রিস্ট ধর্মে ‘সম্প্রদায়’ বলতে বোঝানো হয়ে থাকে কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে, যারা ইতিহাসের কোনো এক পর্যায়ে বিশেষ কোনো প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক গুরুর অধীনে ধর্মীয় মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। কিন্তু ইসলামে সুন্নি-শিয়া বিভাজনটি এভাবে হয়নি। সুন্নি-শিয়া বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে দুটি স্বতন্ত্র ধারণা থেকে, যার মাধ্যমে মুসলিম জনগণের নেতৃত্ব কে দেবেন তা নির্ধারিত হয়। বিষয়টির সূত্রপাত হয় নবি (স.)-এর প্রয়াণের পর থেকে। এ নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ হয়েছে। তখনো নবি (স.)-এর অনেক ঘনিষ্ঠ সাহাবি জীবিত ছিলেন। নেতৃত্ব বা কর্তৃত্বের প্রশ্নটি ছিল সংঘর্ষের মূল কারণ। বর্তমান সময় থেকে চল্লিশ বছর আগেও, সুন্নি ও শিয়া শব্দটি পাঠ্যপুস্তকের বাইরে পশ্চিমা বিশ্বের মানুষের কাছে একপ্রকার অজানাই ছিল। সুন্নি ও শিয়াদের মাঝে কোনো প্রাচীন বিবাদ যদি মুসলিম বিশ্বের বিভাজনের ত্রæটিরেখা হয়ে থাকে, তাহলে ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের আগের দিনগুলোতে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি কেন? এ এসঙ্গে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নজির তুলে ধরা যেতে পারে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসিত নজির তুলে ধরা যেতে পারে। ভারতবর্ষ স্বাধীনতালাভের প্রাক্কালে যখন খÐিত করা হলো, তখন হিন্দু প্রধান অংশ হলো ভারত, আর মুসলিম প্রধান অংশ হলো পাকিস্তান। ভারত ভাগের প্রশ্নে শিয়া-সুন্নি বিভাজনটি বিশেষ কোনো গুরুত্ব লাভ করেনি। যদিও ভারতে ও পাকিস্তানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সুন্নি ও শিয়া মুসলিমের অস্তিত্ব ছিল। অপরদিকে, বর্তমানের মধ্যপ্রাচ্যে অনেক দুর্বিপাকের কারণ হিসেবে একটি প্রাচীন ধর্মীয় বিবাদ ও আদিম বিশেষকে আজ দায়ী করা হচ্ছে। পাশ্চাত্যের প্রভাবশালী নেতৃবর্গ এ জাতীয় সহজসুলভ ধারণাকেই উসকানি দিচ্ছেন। সুন্নিবাদ ও শিয়াবাদ এখন এক রক্তাক্ত বিদ্বেষে পরিণত হয়েছে। যা অনেকটা ইউরোপীয় সংস্কার আন্দোলন যুগের সমপর্যায়ের। এ এসঙ্গে মধ্যপাচ্যবিষয়ক জনৈক বিশেষজ্ঞ কলামলেখক থমাস ফ্রিডমানের উক্তি প্রণিধানযোগ্য। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের পহেলা এপ্রিলে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রগলভ নিবন্ধে ফ্রিডমান উল্লেখ করেন, “আজকের ইয়েমেনের ঘটনাবলির সারকথা হচ্ছে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের সেই পুরোনো দ্বা›িদ্বক প্রশ্ন যে, নবি মুহাম্মাদ (স.)-এর প্রকৃত উত্তরাধিকারী কারা? শিয়া সম্প্রদায়, নাকি সুন্নি সম্প্রদায়? এ প্রশ্নের উত্তর নির্ধারণ করা চ্যালেঞ্জের বিষয়, তবে এ গ্রন্থের সমাপনী অধ্যায়ে তা সুস্পষ্ট করা হয়েছে। বর্তমান বিশ্বের আরেক ব্যক্তিত্ব, যিনি সুন্নি-শিয়া বিভাজনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ের প্রতি উৎসাহমূলক ইঙ্গিত প্রদান করেছেন, তিনি হলেন বারাক ওবামা। ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের জানুযারি মাসে তার ‘স্টেট অব ইউনিয়ন’ ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন, “মধ্যপ্রাচ্য এক স্টেট অব প্রজন্মকালব্যাপী একটি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে, যা হাজার বছরের দ্বা›িদ্বক বিতর্কের মধ্যে প্রোথিত।” এ ইঙ্গিত স্পষ্টতই সুন্নি-শিয়া ভিভাজনকে লক্ষ্য করে উল্লেখ করা হয়েছে। ওবামা আরো বলেছেন যে, বর্তমান আরব বিশ্বের অস্থিতিশীলতার চালিকাশক্তি হচ্ছে সুপ্রচীন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক ব্যবধান। পাশ্চাত্য বিশ্বে সোজাসাপ্টা যে ধারণটি বিপজ্জনকভাবে বদ্ধমূল হয়ে আছে তা হলো : সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত মুসলিমগণ চিরন্তন ধর্মীয় যুদ্ধাবস্থায় নিমজ্জিত হয়ে আছেন এবং শত শত বছর ধরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারস্পরিক যে দ্ব›দ্ব, তা আজ মধ্যপ্রাচ্যের সকল ত্রæটির মৌলিক কারণ। এটি সাদামাটা কথা। তবে এ থেকে গত কয়েক বছরে সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা কিঞ্চিৎ বিভ্রান্তিকর। কারণ, সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যে সংঘর্ষ ঘটছে, তা প্রধানত রাজনৈতিক বিষয়কেন্দ্রিক। এ রক্তক্ষয় অবসানের উপায় হলো রাজনৈতিক সংকটগুলো খুঁজে বের করা! দুর্ভাগবশত, সে প্রয়াস একাধিক মহলের কায়েমি স্বার্থের পরিপন্থি। ইসলামে অথবা মধপ্রাচ্যে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক কলহকে স্থানীয় অথবা আঞ্চলিক সংকট হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। বর্তমান সময়ে এ সংকট প্রশ্নাতীতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ঘটনা ঘটে আসছে ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে এবং ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে অতি দ্রæতলয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবের অন্তরালে অনিষ্টকর মহলের ইন্ধন রয়েছে বটে, কিন্তু একই সঙ্গে তা নাশ করার মতো শক্তিও রয়েছে। অতএব, এখন পর্যন্ত হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। জন ম্যাকহিউগো ২০১৭