গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস একজন প্রত্যক্ষদর্শীর দৃষ্টিতে- বইটি একটি বিশ্বয়কর বই। বৃহৎ এই বইয়ে লেখক সততার সংগে তাঁর অভিজ্ঞতা একের পর এক বর্ণনা করে গেছেন। বর্ণনাগুলো বেশ পুঙ্খানুপুঙ্খ ও গভীর এবং ক্যামেরার ছবির মত হয়েছে। এখানে আপনি ড. ইউনূসের একটি দোষে-গুণে ভরপুর অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্বের সাক্ষৎ পাবেন। তবে লেখক কখনোই আবেগে আপ্লুত হয়ে ড. ইউনূসের মৌলিক সীমাবদ্ধতাটির কথা বিস্মৃত হননি। লেখকের মুল্যায়নে তিনি আসলে পূঁজিবাদেরই লোক। ব্যক্তি ড. ইউনূসের বিভিন্ন উচ্চ গুণাবলির কথা যেমন লেখক অকাতরে তুলে ধরেছেন, তেমনি তাঁর ক্ষুদ্র ঋণ দর্শনের ক্ষুদ্রতারও অত্যন্ত কঠোর সমালোচনা এই বইয়ে বিবৃত হয়েছে। বইটি যদি ড. ইউনূস নামে একজন ব্যক্তির কর্মের বিবরণ হিসাবে দেখা হয় - তাহলেও বইটির একটি অনন্য দলিলমুল্য থাকবে। কারণ ড. ইউনূস বর্তমানে একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে নতুন রাজনীতির পথে পা বাড়ানোর কথা ঘোষণা দিয়েছেন। স্বভাবতই লোকে এখন জানতে চাইতে পারেন - ড. ইউনূস লোকটা আসলে একজন কেমন লোক? এর একটি অন্য উত্তর পাঠক অবশ্যই পেতে পারেন ড. ইউনূসের স্বলিখিত আত্মজীবনীতে। কিন্তু নিজের আয়নায় নিজেকে দেখার মধ্যে অনেক সময়ই কিছু পক্ষপাতিত্ব থেকে যায়। তাই অন্যের আয়নাতেও নিজেকে দেখতে হয়। এই বইয়ের লেখক সরদার আমিন ড. ইউনূসের সেরকমই একজন ঘনিষ্ঠ আয়না। এই বইয়ের ড. ইউনূসের কর্মময় জীবনের ঘনিষ্ঠ বর্ণনার পাশাপাশি অঙ্গাঙ্গীভাবে উঠে এসেছে তাঁর অন্যতম কীর্তি - গ্রামীণ ব্যাংকের জন্ম, বিকাশ ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার কাহিনী। তাই এই বইটি একই সংগে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংকের জীবন ঘনিষ্ঠ এক ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। নিশ্চত যে বইটি একটি বহুল পঠিত-বহুল আলোচিত এবং বহুল সমালোচিত বইয়ে পরিণত হবে। প্রকাশক, ২০০৭ সাল।