পূর্ববঙ্গের যে কয়েকজন রাজা-জমিদার ভারতের নন্দনকলার সংগীত শাখায় নিবেদিত ছিলেন তাদের মধ্যে জিতেন্দ্র কিশোর আচার্য্য চৌধুরী (১৮৮৪-১৯৪১) প্রণিধানযোগ্য। তিনি মুক্তাগাছা জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তাগাছার জমিদারদের প্রজানিপীড়ক হিসেবে পরিচিতির পাশে সমঝদার ও প্রজাহিতৈষী বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়। অনেক খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী মুক্তাগাছার রাজপরিবারে বেতনভোগী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ তালিকায় ছিলেন নগেন্দ্র চন্দ্র ভট্টাচার্য, শ্যামবাবু প্রমুখ। সংগীত সংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষকতার পাশে জিতেন্দ্র কিশোরের শিকারের ঝোঁক ছিল। তৎকালীন ভারতের অনেক পত্রিকায় শিকার কাহিনির খণ্ডচিত্র প্রকাশ পেলেও তার রচিত 'শিকার স্মৃতি' এখনো প্রাসঙ্গিক ও পাঠক অন্বেষী। জিতেন্দ্র কিশোরের শিকারপার্টিতে ৪০-৫০টি হাতির বহরের সাক্ষ্য মিলে। তিনি আনন্দ-উল্লাসপূর্ণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। মুক্তাগাছার তৎকালীন সাংস্কৃতিক দল 'আয়মান তীরের শিল্পী সমাজ'-এর অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন জিতেন্দ্র কিশোর। বোহেমিয়ান জীবনযাপনের জন্য মাত্র ৪০ বছর বয়সে ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হন এবং ১৯৪১ সালে নেফ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন।