মিনি গ্রামীণ যৌথ সংসারে মানুষ। সে দুরন্ত, ডানপিটে, জেদী, কিন্তু সত্যবাদী এবং নির্ভীক। ওর একটা দল আছে। দলবল নিয়ে কখনো বেরিয়ে পড়ে গাছ থেকে আম, পেয়ারা চুরি করতে, কখনো বেরিয়ে পড়ে মাছ ধরতে। কোনো ভয় ওকে আটকাতে পারে না। পড়াশোনায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও স্কুল দূরে হওয়াতে সমাজপতিদের নির্দেশনায় পড়াশোনা আর হয়ে ওঠে না। সমাজ সংস্কারের রক্তচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যায় ওর মতো মেয়েদের পড়ালেখা করার দুর্দান্ত ইচ্ছেগুলো। বাল্যবিয়ের যূপকাষ্ঠে বলি হতে হয় তাদের। কিন্তু মিনি থেমে থাকে না। ও এগিয়ে চলে। কাকিমাদের অবহেলা অনাদরে মানুষ হলেও ওর জেদ, ঐকান্তিক চেষ্টা, ওর মনোবল ওকে এগিয়ে নিয়ে যায় অনাগত ভবিষ্যতের দিকে। দলবল নিয়ে ঘটিয়ে চলে একের পর এক রোমাঞ্চকর ঘটনা... তবে, চলার পথে প্রতিটা মুহূর্তে কেউ না কেউ ওকে বুঝিয়ে দেয় ওর মা নেই। কোনো আবদার, কোনো ইচ্ছে পূরণের ক্ষেত্রেও ‘মা-হারা’ শব্দটা প্রকট হয়ে ওঠে। তবুও মিনি থেমে থাকে না। অনাদর উপেক্ষা করেও জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবার এক দৃঢ় প্রত্যয়ে ব্রতী হয়। মাতৃহারা বিষাদিত জীবনে হতাশা থাকা সত্ত্বেও দুরন্ত দস্যিপনায় মেতে ওঠা এক কিশোরীর যাপিত জীবনের দিনপঞ্জি এই উপন্যাস মিনির মেয়েবেলা।