২০০৯ সাল। রোমাঞ্চকর একটি চলচ্চিত্রের সূচনা যেনো! ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে বিধ্বস্ত উপকূলের জীবন ও প্রকৃতি নিয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক জেলেদের মুখে জানতে পারেন, সুন্দরবনের নৃশংস ও বেপরোয়া অপরাধীরা কীভাবে পুরো সুন্দরবনের জনজীবনকে জিম্মি করে রেখেছে। দস্যুদলকে থামাবার স্বপ্ন দেখতে থাকেন তিনি। পথ খুঁজতে গিয়ে ডাকাতদেরই ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে চলে আসেন। দুঃসাহসী সেই কাজে ঝুঁকি ছিলো অজস্র। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সাথে দস্যুদলের তুমুল গোলাগুলির মাঝে শ্বাসমূলের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত পায়ে দৌড়াতে হয়েছে জলকাদায় মাখামাখি সেই রহস্যময় বনের ভেতর দিয়ে।br নজরদারি এড়িয়ে দস্যুদের গোপন ডেরায় পৌঁছুতে পাড়ি দিতে হয়েছে দিকচিহ্নহীন রাতের সমুদ্র। চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র, গোপন হত্যা, গডফাদারদের উস্কানিতে ডাকাতদলের বিদ্রোহী সদস্যদের হুমকি, বিপদের শেষ নেই! ডাকাতদের সাথে মাখামাখির বদনামও কুড়িয়েছেন, দমে যাননি। একের পর এক ডাকাত বাহিনীর আত্মসমর্পণে ভূমিকা রেখেছেন, সুন্দরবনের দস্যুতার অবসান হয়েছে। ফিরে আসা দস্যুদের রক্ষা করতে হয়েছে প্রতিহিংসা থেকে। অরণ্য আর অরণ্যের মানুষের জীবনের রূপান্তরে সক্রিয় অনুঘটকের ভূমিকা রেখেছেন সাংবাদিক মোহসীন উল হাকিম।
সাংবাদিকতায় মােহসীন-উল হাকিমের পদচারণা সেই ২০০০ সাল থেকে। গত দুই দশকে কাজ করেছেন। চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, দেশ টিভি, এটিএন নিউজ, চ্যানেল২৪ এ। বর্তমানে কাজ করছেন যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে। মূলত রাজনৈতিক প্রতিবেদক হলেও প্রান্তিক মানুষ নিয়ে কাজ করে আসছেন শুরু থেকেই। প্রান্তিক দূর দূরান্তের মানুষের জীবনগাঁথা তুলে এনেছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে। তারই অংশ হিসেবে সুন্দরবনে কাজ করছেন দীর্ঘ ১১ বছর ধরে ভবিষ্যতেও একইভাবে কাজ করে যেতে চান তিনি। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স । ছােটবেলায় নওগাঁর কেভি স্কুলেও পড়েছেন। বাবা বীর মুক্তিযােদ্ধা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর মাে আব্দুল হাকিম (অব), মা সাহারা হাকিম। সহধর্মিণী নাজ সুলতানা পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক। এদেরকে নিয়েই তার পারিবারিক জীবন।