কখনো দ্রাঘিমাংশের শেষ নীলোৎপল দেখতে বৈমানিক হয়ে ককপিটের ইয়োক ধরেছি। আমেরিকার সুদূর আকাশ হতে তাকিয়ে থেকেছি মনের গহীনে জমে থাকা শৈশবের বালুচরে। মূল পেশার চেয়ে লেখক হিসেবে পরিচয় পেতে খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। "মৃত্যুর কয়েক সেকেন্ড আগে" গল্প সংকলনটির প্রতিটি গল্প আমার নিজের কিংবা আমার জীবনের সাথে সম্পৃক্ত কিছু মানুষের হুবহু বাস্তব ঘটনা। মাটির মানুষকে আকাশের কবি হতে সেকেন্ড লাগে না। আর আকাশের ইন্সট্রমেন্টাল মানুষ (বৈমানিক) হয়ে মাটির মানুষের কাছে ফিরে যেতে যথেষ্ট মেধা, ধৈর্য, চৌকস, সময়ের সিদ্ধান্ত ও স্বপ্নহীন একটা বাস্তবিক মাথা ও কলিজা লাগে। কারণ আকাশ চিরে তাকে চলতে হয়। তাই কলমের ছোঁয়ায় সাহিত্য ও টেকনোলজির একটা মিলন আনার চেষ্টা করেছি মাত্র। সবগুলো গল্প একই শ্রেণীর নয় বরং বিভিন্ন ধাঁচের টক-জ্বাল-মিষ্টি করে সম্মানিত পাঠকদের কাছে পৌঁছাতে চেয়েছি। খড়গের কান ঘেষে খরতার নিঃশেষে প্যাঁচিয়ে ওঠা স্বপ্নেরা নিঃশেষ হয় কিন্তু সন্তানের কাছে বাবা-মায়ের প্রয়োজন ফুরোয় না। আমার কলম ধরার জাদুকর আমার বাবা জনাব মোঃ আমীর হোসাইন শিকদার ও ছটফট করা ভালোবাসার ডাকনাম আমার জন্মদাত্রী মা ফিরোজা বেগম, যাদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। যাঁর কথায় সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি তিনি আমার বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক শ্রী কবিকুসুম রায় চক্রবর্তী। আমাকে উৎসাহের কাঁপন ধরানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ঔপন্যাসিক এ কে আজাদকে। সার্বিকভাবে সহযোগিতার জন্য কবি শাকেরা আহমেদ, শুভংকর পাল, ইসরাত মনোয়ার রিনি, মনিরা সুলতানা ও মাসউদুর রহমান সোয়াদের প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা রইল। বেড়ে বেড়ে কখনোই অসাধারণ হতে চাই না বরং মিহি হয়ে মিলিয়ে থাকতে চাই সবার সাথে সাধারণ হয়ে। সম্মোহিত জন্মভূমির ঋণ শোধ দেবার অনুভূতি নিয়ে একে একে কলমের আঁচড়ে কাগুজে মলাটে রূপ দিলাম। দীর্ঘ সময়ে জমে থাকা ডজনখানিক পাণ্ডুলিপির প্রথম এই প্রকাশটি যদি পাঠকপ্রিয়তা পায় তবে কথা দিলাম, ধারাবাহিকতায় আবারও কলম বাড়াবো।