মনোসামাজিক (Psychosocial একটি মনোবৈজ্ঞানিক প্রত্যয় যেটি মনো (Psyche) ও সামাজিক (social) -এর মিলিতরূপ যার অর্থ relating to the interrelation of social factors and individual thought and behavior অর্থাৎ ব্যক্তির প্রেক্ষিতে তাঁর ব্যক্তিগত চিন্তা ও আচরণের স্বরূপ উদ্ঘাটন ও বিশ্লেষণ বইটির মূল উপজীব্য। কারণ বিশ্ব রাজনীতির নাট্যমঞ্চে এক আলোচিত-আলোড়িত ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি নিজেকে এমন এক মহিরুহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে গেছেন যেখান থেকে গবেষক, পাঠক, সংবাদকর্মী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, মানবাধিকারের প্রবক্তা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্দীপ্ত বুদ্ধিজীবী, কবি, গীতিকার, গাল্পিক, প্রাবন্ধিক, আলোকচিত্রী, চিত্রকর, ইতিহাসবিদ, জীবনীকার প্রত্যেকেই পেশাগত খোরাক নিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন এবং সংবাদপ্রেমীরা পাচ্ছেন নিত্য-নতুন সংবাদের উপাদান। শিক্ষাবিদ, লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক ও ভ্রামণিক ড. ডি. এম. ফিরোজ শাহ-র ভিন্নধারার গ্রন্থ বঙ্গবন্ধুর আলোকচিত্রের মনোসামাজিক বিশ্লেষণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি অভূতপূর্ব রচনা। আলোকচিত্র বা ছবি যেকোনো গ্রন্থের উপজীব্য হতে পারে তা হয়তো অনেকেই ভাবেননি, যা এখন বাস্তব। বঙ্গবন্ধুর প্রাপ্ত ছবিসমূহকে ৮টি অধ্যায়ে বিভক্ত করে উল্লিখিত সকল চিত্রের সম্ভাব্য মনস্তাত্ত্বিক/মনোসামাজিক ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে এবং প্রখ্যাত ব্যক্তিদের কবিতাংশ, উদ্ধৃতি ও বাণীর মাধ্যমে প্রতিটি ছবির গুরুত্ব/ভাব/তাৎপর্য যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সমঝদার পাঠক আলোচ্য বইটি পাঠ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ভিন্নতর তথ্যের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবেন। বঙ্গবন্ধুর আলোকচিত্রের মনোসামাজিক বিশ্লেষণ গ্রন্থটি পাঠক মহলে সমাদৃত হবে এ আশাবাদ রইল।
ড. ডি. এম. ফিরোজ শাহ্, জন্ম ০১ আগস্ট ১৯৬৯, কুতুবপুর, শিবচর, মাদারীপুরে। স্বনামধন্য চিকিৎসক পিতা ডা. মমিন উদ্দিন আহমেদ এবং মা রহিমা বেগমের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। পেশা অধ্যাপনা। বর্তমানে তিনি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। একজন শিক্ষক প্রশিক্ষক হিসেবে দেশব্যাপী সুখ্যাতি থাকলেও ভালো লাগে নজরুলের দুরন্তপনা, শরৎচন্দ্রের বোহেমিয়ান জীবন, বুদ্ধদেবের নিসর্গ আর সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশ ভ্রমণ। এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু দেশসহ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়িয়েছেন। মধ্যরাতের সুনসান নিরবতা আকর্ষণ করে প্রবলভাবে, খরতাপে ভিজতে ভালো লাগে, পাহাড়ের উচ্চতা আশা জাগায়, সমুদ্রের গভীরতা ভাবতে শেখায়। নদী-নারী-প্রকৃতি এ নিয়ে তাঁর কৃতি। মানব-মন, দ্বন্দ্ব, সংঘাত, প্রেম, ঈর্ষা আর আশা এ সবের প্রতি নিগূঢ় ভালোবাসা। নানা ধরনের রচনার সংখ্যা প্রায় ৪০টি। ১৯৯৬ সাল থেকে একাডেমিক গ্রন্থ রচনায় নিয়োজিত রয়েছেন। তাঁর বই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্বদ্যিালয় ও সরকারের টিকিউআই প্রকল্প কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। মিতা ট্রেডার্স থেকে প্রকাশিত বিএড কর্মসূচির আলোচিত বইসমূহ হলো- ভূগোল শিক্ষণ, মাধ্যমিক শিক্ষা, শিখন-শেখানো দক্ষতা ও কৌশল, শিক্ষায় গবেষণা ইত্যাদি। আগামী প্রকাশনী থেকে ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয় আলোচিত গল্পগ্রন্থ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ এবং ২০০৭ সালে ইরাবতী। ২০১৯ সালে তাঁর আলোচিত ভ্রমণ কাহিনী ফিলিপাইন: রহস্যঘেরা এক মায়াবী দ্বীপরাষ্ট্র, ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাসংক্রান্ত কর্ম নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শন, ২০২১ সালে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ দশ রাজনীতিবিদ, ২০২২ সালে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও গারো পাহাড়ের খোঁজে (ভ্রমণ কাহিনি) আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়।