তারা দিনের বেলায় খাবার সন্ধানে বের হয়। রাতের বেলা ফেরে। কারণ রাতে জঙ্গলে কোনো মানুষ যায় না। কোনদিন কোনদিক যাবে রাজকন্যা আগেই জেনে নেয়। দাদিমার কাছ থেকে। যেদিন উত্তরে যাবে বলে, সেদিন রাজকন্যা দক্ষিণে যায়। কেঁদে কেঁদে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু পালাতে পারে না। পালালে কঠিন বিপদ। দাদিমা বলেছে, তুই পালিয়ে গেলে তোর বাবা-মাকে ধরে এনে খাব। তোর গন্ধ যখন একবার পেয়েছি, এই গন্ধ শুঁকে পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে তোকে খুঁজে বের করব। এসব কথার কারণে রাজকন্যা অনেক ভয় পেয়ে যায়। ভয় পেয়ে সে নিজের পরিচয় দেয়নি। সে যতই রাজার মেয়ে হোক, রাক্ষস জানতে পারলে রাজাকেও রেহাই দেবে না। তবে দাদিমা উকুন বাছার সময় হাসতে হাসতে একদিন বলেছিল, তুই মুক্তি পাবি সেদিন, যেদিন আমাদের মৃত্যু হবে। রাজকন্যা জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি সবাই একসাথে মরবে? : হ্যাঁ, একসাথে। যে রাক্ষস আজ জন্ম নেবে, সে-ও আমার সাথে মরবে। : মানে বুঝলাম না দাদিমা। : তোর অত বুঝার দরকার নেই নাতনি। তুই উকুন বেছে দে। রাজকন্যার মনে আরো ভয় ঢুকে গেল। কবে এই রাক্ষসগুলো একসাথে মরবে, আর কবেই বা সে মুক্তি পাবে? তার চোখে ঘুম নেই। ফুটফুটে রাজকন্যা কত মলিন হয়ে গেছে। নিজেকে দেখার একটা আয়নাও নেই।