সভ্যতার সূতিকাগার বলে খ্যাত প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার মিথলজিবিষয়ক একটি আকর গ্রন্থ বলা যায় একে। টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিসের মধ্যবর্তী অঞ্চলে বিকশিত সুমেরীয়, ব্যাবিলনীয় ও অ্যাসিরীয় সভ্যতার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং রাজনৈতিক উত্থান-পতনের ইতিহাস যুগপৎভাবে উঠে এসেছে এখানে। লেখক একদিকে মিথ ও কিংবদন্তিকে তাদের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক পটভূমিতের স্থাপন করেছেন, অন্যদিকে বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থ, প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার ও মিথলজির তুলনামূলক পাঠের সূত্র ধরে ব্যাবিলনীয় ও অ্যাসিরীয় মিথের বৈশ্বিক অবস্থান চিহ্নিত করার প্রয়াস পেয়েছেন। তাছাড়া, গ্রিক এবং রোমানসহ পরবর্তীকালের উন্নত সভ্যতাগুলোর ওপর ব্যাবিলনীয় এবং অ্যাসিরীয় সংস্কৃতির প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন তিনি। ব্যাবিলনীয় সৃষ্টিপুরাণ ও গিলগামেশ মহাকাব্যসহ মেসোপটেমীয় দেবদেবীদের অসংখ্য কিংবদন্তি এবং পরকাল বিষয়ক চমকপ্রদ অনেক কাহিনি উঠে এসেছে এই গ্রন্থে। একই সঙ্গে, ব্যাবিলনিয়া ও অ্যাসিরিয়ার জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যোতিষশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, সমরবিদ্যা, কৃষিব্যবস্থা, জাদুচর্চা, শিল্প-সংস্কৃতি, রাজনীতি ও মহান সম্রাটদের রাজত্বকাল সম্পর্কে বিপুল তথ্যের সন্নিবেশ ঘটেছে এখানে। সামগ্রিকভাবে এই গ্রন্থটি বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী পৌরাণিক ঐতিহ্যের আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল পাঠ। ফলে, প্রাচীন ব্যাবিলনিয়া ও অ্যাসিরিয়ার মিথলজি, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিষয়ে আগ্রহী পাঠকদের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ।