বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবুজ শ্যামলীমায় ঘেরা ফরিদপুর জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত সুফী মুসলিম পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ মঙ্গলবার রাত আট ঘটিকায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বাঙালি জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয় বিশ্বের ইতিহাসেও এক বিরল ঘটনা সৃষ্টি করেন। বাবা লুৎফর রহমান, রত্নাগর্ভা মাতা মোসাম্মৎ সাহেরা খাতুন। দাদা শেখ আবদুল হামিদ নানা শেখ আবদুল হামিদ। বাবা-মা সোহাগ করে নাম রেখেছিলেন খোকা। নানা নাম রেখেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। চার বোন দুই ভাই-এর মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। গৃহশিক্ষক পণ্ডিত শাখাওয়াৎ উল্লার নিকট নিজ বাড়িতে লেখাপড়ায় হাতেখড়ি। শৈশব কাল থেকেই তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা, তথা মহামানবদের জীবনে যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে তার সবই ফুটে উঠে বঙ্গবন্ধুর শৈশব বেলায়। স্থানীয় গিমডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯২৯ সালে নয় বৎসর বয়সে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে। বাবা শেখ লুৎফর রহমান মাদারীপুর দেওয়ানী আদালতে সেরেস্তাদার হিসেবে চাকরি করতেন। বাবা, শেখ মুজিবুর-এর লেখাপড়ার সুবিধার জন্য কর্মস্থলে নিজের কাছে নিয়ে এসে ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন।
মাে. মজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালে ঢাকা জেলার দোহার থানার কুশুম হাটী ইউনিয়নের, কার্তিকপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মুন্সি মাে. এরশাদ আলী, মা মরহুমা জিরাতুন নেছা। তিনভাই দুই বােনের মধ্যে তিনি সবার ছােট। স্থানীয় স্কুল থানা সদর কলেজ থেকে এস.এস.সি. ও এইচ.এস.সি. পাশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ছােটবেলা থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর এক অনুরাগী হয়ে উঠেন। কলেজে ছাত্রাবস্থায়। ছাত্রলীগে যােগদান করেন। ডি, এন, কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জি. এস পদে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য নির্বাচিত হন। লেখাপড়ার পাশাপাশি জনসেবামূলক কাজে আত্মনিয়ােগ করেন নিজ এলাকায়। সব স্তরের জনগণের মাঝে অল্প সময়ের মধ্যে একজন সৎ এবং নিঃস্বার্থ সমাজসেবক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। আশির দশকের শেষের দিকে জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাদের রােষানলে পড়ে কয়েকটি মিথ্যা অস্ত্র মামলায় জড়িয়ে পড়েন। পরিবারের তথা মায়ের প্রবল চাপের মুখে বাধ্য হয়ে দেশ ত্যাগ করে ইউরােপে পাড়ি জমান। ১৯৯১ সাল থেকে ইতালিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। '৯৪ সালে রােমে হােটেল ম্যানেজম্যান্ট এবং '৯৬-৯৭ সালে ব্যবসার উপর ডিপ্লমা লাভ করেন। ৯৯ এপ্রিল মাসে “বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন” নামে একটি গবেষণামূলক সংগঠন গড়ে তােলেন এবং তিনি। তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ইতালিতে আওয়ামীসহ বাঙালি এবং বিদেশি বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সক্রীয়ভাবে জড়িত। “বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের উপর বাংলা এবং ইতালীয়ান পত্রিকায় বিশেষ ট্রফিক্স লিখে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। '৯৬ সালে ইতালীয়ান ভাষা শিক্ষার জন্য '৯৭ সালে দ্বিতীয় সংস্করণ এবং '৯৯ সালে বাংলা ইতালীয়ান ইংরেজী ভাষা শিক্ষার উপর আরাে একটি বই প্রকাশ করেন। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিটি বই ব্যাপকভাবে সমাদৃত। তিনি ইতালি তথা সর্ব ইউরােপে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে বিশেষ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।