'আমার হার্টের অবস্থা কি বুঝতে পারছেন না, ডাক্তার সাহেব?' লামিয়ার বিরবির করা দেখে ছেলেটি তাকালো। বলল, 'কিছু বললেন?' লামিয়া না-সূচক মাথা নাড়লো। স্মিত হেসে বলল, 'না।' তারপর, কিছু সময় নীরবেই পেরিয়ে গেল। হঠাৎ করে তাকাতেই লামিয়া দেখতে পেল ছেলেটি তার থেকে অনেক দূরে। ধীরে ধীরে তাদের মাঝে দূরত্ব বাড়তে লাগলো। লামিয়া ছেলেটিকে ছুঁতে চাইলো। হাত বাড়িয়ে ধরতে চাইলো তার হাত। কিন্তু, ছোঁয়ার আগেই সে আরও দূরে চলে গেল। একসময় তাদের মাঝে সীমাহীন দূরত্ব তৈরি হলো। আর, ধীরে ধীরে ছেলেটি কুয়াশার আঁড়ালে হারিয়ে গেল। লামিয়া আঁতকে উঠলো। তৎক্ষনাৎ উঠে বসলো। বা হাতের পীঠ দিয়ে ললাটের ঘামটা মুছে নিয়ে চারপাশে চোখ বোলালো। একি! সে তো ঘরে। তবে যে, দেখলো তারা ট্রেনে? লামিয়া বুঝতে পারলো, সে স্বপ্ন দেখেছে। স্বপ্ন বললে ভুল হবে। সত্যি স্বপ্ন! অতীতে ঘটা কোনো ঘটনা স্বপ্নে দেখাকে কী বলে, তা লামিয়ার জানা নেই। কিছুক্ষণ আগের স্বপ্নটা কাল রাতের ট্রেনের কিছু দৃশ্য। মাঝে দিয়ে উঠে ছেলেটি ওয়াশরুমে যায়। ঠিক সেই পর্যন্তই স্বপ্ন দেখেছে সে। তবে, এখানে দেখলো ছেলেটি তাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। লামিয়া দু'হাতে মুখ ঢেকে নিলো। লম্বা করে শ্বাস নিয়ে পুরো মুখের ঘাম মুছে নিলো। ঘামে পুরো ভিজে গেছে। অতঃপর, বিছানার পাশে থাকা টেবিলের উপর থেকে ওয়াটার পট থেকে ঢকঢক করে কিছুটা পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করলো। মনকে বোঝালো, 'ভোর থেকে এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতেই মস্তিষ্কে গেঁথে গিয়েছে। তাই, এমন স্বপ্ন দেখেছি। এসব কিছু না। ঢাকায় গেলে তার সাথে দেখা হবে তো।' কিন্তু, মন কি আর মানে? হুঁ, হুঁ করে কেঁদে উঠলো। বলল, 'এতটুকুই ছিল পথ চলা?'