ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে প্রথমবর্ষ অনার্সের ছাত্রী থাকাকালেই জনপ্রিয় সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সাথে আমার পরিচয় ঘটে। খুব দ্রুতই সেই পরিচয় বন্ধুত্বে পরিণত হয়। আমার এই পরিচয়ের যোগসূত্র ছিল আমারই সহপাঠী একটি মেয়ে। সেই মেয়েটিকে হুমায়ূন আহমেদ অনুরাগবশত নাম দিয়েছিলেন “পরী”। পরীর সাথে আমিও খুব ঘনঘন হুমায়ূন আহমেদের কক্ষে যাতায়াত করতাম। সে সময় বিজ্ঞান অনুষদের অনেক ছাত্র-শিক্ষক এ বিষয়টা বেশ আগ্রহ নিয়ে লক্ষ্য করতেন। এতকাল পরেও অনেকে সেকথা ভুলতে পারেননি। তাদেরই একজনের অনুরোধে ‘হুমায়ূন আহমেদ, পরী ও কিছু চিঠি’ শিরোনামের স্মৃতিচারণ লিখতে শুরু করি। ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ খ্রীস্টাব্দ! সুদীর্ঘ একান্ন বছর আগে যে ঘটনার সূত্রপাত, তা হুবহু তুলে ধরা সহজ ব্যাপার নয়। ভাগ্যক্রমে হুমায়ূন আহমেদের লেখা মোট আটটি চিঠি ও চিরকুট এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যের লেখা অনেকগুলি প্রসঙ্গিক চিঠি এতকালের যত্ন-অযত্ন সয়ে আমার কাছেই রয়ে গেছে। ফলে খুব সহজেই ঘটনা-পরম্পরা সাজিয়ে নিতে পেরেছি। তারপরেও ভয় ছিল, পরী যদি তার ব্যক্তিগত জীবনের কাহিনী প্রকাশে আপত্তি জানায়, তখন কি হবে? সুদূর আমেরিকা প্রবাসী পরী ও তার স্বামী ২০২২ সালে বাংলাদেশে এসে পরীর সহপাঠীদের সাথে কিছু সময় কাটানোয় প্রসঙ্গটি উত্থাপন করার বিষয়ে ভাবতে লাগলাম। ভাবতে ভাবতে বছর পেরিয়ে গেলো! অবশেষে যখন পরীকে জিজ্ঞেস করলাম, সে খুব সহজভাবেই অনুমতি দিয়ে দিল! ধন্যবাদ পরী, অশেষ ধন্যবাদ। তবে সম্ভাব্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াবার লক্ষ্যে এই স্মৃতিচারণে তোমার নামটি উহ্য রাখাই সঙ্গত মনে হলো। তাই হুমায়ূন আহমেদের দেওয়া “পরী” নামেই তোমার কথা লিখলাম। সম্ভাব্য ভুলত্রুটির জন্য রইলাম ক্ষমাপ্রার্থী।