সন্তান প্রতিপালনের কোনো সর্বজন-অনুসরণীয় সূত্র নেই। প্রয়োজন নিজের মানসিক জগতকে জানা এবং সন্তানের সাথে একটি মানসিক যোগাযোগ স্থাপন করার দক্ষতা অর্জন করা। সন্তান বড় হয়ে ওঠে মা-বাবার মনোজগত দ্বারা সৃষ্ট ধারণা ও আচরণ দিয়ে। মা-বাবা নিজের মানসিক জগতকে কতটা আবিষ্কার করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করে তিনি সন্তানের সাথে কতটা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন। উৎকৃষ্ট যোগাযোগের মাধ্যমেই সন্তান তার জগৎ ও জীবনকে স্পষ্টভাবে দেখতে ও বুঝতে শেখে। মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে সাধারণ কিছু জ্ঞান এ যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে সহজ করে। একইভাবে নির্ভুল বা উৎকৃষ্ট পেরেন্টিং বলেও কিছু নেই। সন্তানকে ‘জাজমেন্টাল’ না হয়ে পিতামাতার জগতকে বুঝতে হয়। এতে সে তার প্রতিপালিত হবার বিভ্রাটগুলো নিজেই সংশোধন করে নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে। মা-বাবা এবং সন্তানের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং যোগাযোগ স্থাপনের জন্য শৈশবই শেষ কথা নয়। যে-কোনো সময় মানুষ ভুল সংশোধন করে সঠিক আচরণটি শুরু করতে পারে। কেননা, মানুুষ পৃথিবীতে সবচেয়ে অভিযোজনশীল প্রাণী। মনোবিজ্ঞানী হুরে জান্নাত শিখা সন্তান প্রতিপালনের বহুমাত্রিক দিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাঞ্জল ভাষায় বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন এ গ্রন্থে। প্রত্যেক মা-বাবার জন্য অতি প্রয়োজনীয় এ গ্রন্থটি পাঠক সমাবেশ প্রকাশিত তাঁর আগেকার বেস্ট সেলার বই ‘আমার হারানো আমি’র মতো বিপুল সংখ্যক পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
হুরে জান্নাত শিখা ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর। ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহন করেন। শৈশব এবং কৈশাের কাটিয়েছেন গ্রামে। সেখানেই স্কুল জীবন। ইডেন কলেজ থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনােবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ ঢাকায় মনােবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই পুত্র সন্তানের জননী। কবিতা ছাড়াও তিনি মনােবিজ্ঞান এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লেখেন।। মানুষের আন্তসম্পর্কের গভীর মনস্তত্ত্ব এবং প্রকৃতির সাথে মানুষের গভীর অন্তরঙ্গতা তার 'চিন্তাশীলতার মূল উপকরণ। কবিতাগুলাে। শিরােনামহীন তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ।