বই পরিচিতি সেই দিন ভোরে, শহীদ কর্নেল জামিলের জন্য তার পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়াটা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিলো। ঘটনাটি আমি আমাদের মুসলিম ইতিহাসে হযরত ইমাম হোসাইন (আ:) এর সাথে কিছুটা তুলনা করতে পারি। ৬১ হিজরী সনে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কারবালায় এজিদের বিশাল সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হয়েছিলেন। এভাবেই নীতিবান, আদর্শবান একজন বীর তার কাজের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে নজির রেখে যান এবং তা থেকে আমরা অনুপ্রাণিত হই। কারবালার ঘটনা ন্যায় এবং অন্যায়ের বিরাট এক শিক্ষা। কারবালা আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের দায়িত্ব। বুঝিয়ে দেয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে নিঃসার্থভাবে সব কিছু বিলিয়ে দিতে! শহীদ কর্নেল জামিল তেমনি তার আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের শিখিয়েছেন নিষ্ঠাবান হতে, দেশপ্রেম ও জাতিকে ভালোবাসতে এবং পিতার মর্যাদা রক্ষা করতে। তাকেও বলা হয়েছিলো ফিরে যাবার জন্য। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “আমি তো ফিরে যেতে আসিনি। তোমরা আমার কমান্ড মানো। আমাকে যেতে দাও ‘বঙ্গবন্ধুর’ কাছে।” তাই হয়েছিলো; সৈন্যরা তার কথা মেনে পথ ছেড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু ঘাতকেরা সেদিন ছিলো নিষ্ঠুর। যে কোনো মূল্যে বঙ্গবন্ধুকে তার পরিবারসহ নিঃশেষ করে দিতে হবে। যুগে যুগে এভাবেই বীরদের জন্ম হয় আামাদের বিবেককে স্মরণ করিয়ে দেবার জন্য। অনেকে বলেন, কর্নেল জামিল তো খালি হাতে চলে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে। কিন্তু আমি বলি, উনি খালি হাতে যাননি। তিনি তার ভালোবাসা, বিশ্বাস, দায়িত্ববোধ, শপথ, দেশপ্রেম, আত্মবিশ্বাস, কর্তব্যপরায়ণতা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। সে দিন ভোরে পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটে যাওয়াটা কি তার ভুল ছিলো? বোকামি ছিলো?