ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলাভাষী মানুষ অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো বাংলা বা বঙ্গ (Bengal) নামে পরিচিত ছিল। মোগল আমলে সুবাহ বাঙ্গালার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে আবুল ফজল বলেন যে, সুবাহ বাঙ্গালা পূর্ব-পশ্চিমে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম হইতে তেলিয়াগড় পর্যন্ত ৪০০ ক্রোশ এবং উত্তর-দক্ষিণে, অর্থাৎ উত্তরে পর্বতমালা হইতে দক্ষিণে হুগলী জেলার মন্দারণ পর্যন্ত ২০০ ক্রোশ বিস্তৃত ছিল। তিনি আরও বলেন যে, সুবাহ বাঙ্গালা পূর্ব ও উত্তর দিকে পর্বতবেষ্টিত এবং দক্ষিণদিকে সমুদ্রবেষ্টিত ছিল। ইহার পশ্চিমদিকে সুবাহ বিহার অবস্থিত ছিল। কামরূপ এবং আসাম সুবাহও বাঙ্গালার সীমান্তে অবস্থিত ছিল। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসনামলে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত সাম্রাজ্যের নাম ছিল- 'বঙ্গ'। ব্রিটিশ শাসনামলে এ অঞ্চলের নাম হয় 'বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি'। এরপর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় পুরো বাংলায় একটা প্রশাসনিক বিভাজন হয়। বাংলার পশ্চিম অংশ হয়ে যায় 'পশ্চিম বঙ্গ' এবং পূর্ব অংশ হয়ে যায় 'পূর্ব বাংলা'। পরবর্তীতে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়। বাংলার দুটো অংশ ছিল: পশ্চিম বাংলা (পশ্চিম বঙ্গ) পরিচিত ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম- অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো মিলে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়। বাংলাভাষী হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়। আর বাংলাভাষী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৯৫৬ সালে 'পূর্ব বাংলা'র নাম পরিবর্তন করে 'পূর্ব পাকিস্তান' রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয় এবং নতুন এ ভূখণ্ডের নাম রাখা হয় 'বাংলাদেশ'।