মানুষের হৃদয়ে পৌঁছতে তার পাকস্থলী হল দ্রুততম রাস্তা— এমনটা তো আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। সেটা যে কতটা সত্য তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এই বইটি। সাবিনা ইয়াসমিন রিংকু তাঁর প্রথম বইতেই নিবিড় মায়ায় আর ভালোবাসায় পাঠকের হাত ধরেছেন। এ কোনও গুরুগম্ভীর রান্নার বই নয়। বরং সামনের জনকে বলা, “কতদিন এদিকপানে আসোনি, এসো দুটো কথা কই।” এবং সেভাবেই সামনের মানুষটাকে রান্নাঘরের সামনের বারান্দায় একটা পিঁড়ে পেতে দিয়ে তিনি শুরু করেছেন গল্প। লিখতে লিখতে সাবিনা ছুঁয়ে গেছেন নস্টালজিক কিছু মুহূর্ত, যা বাঙালির একান্ত আপন। রান্নাও যে আমাদের সংস্কৃতির একটা অন্যতম অংশ, সেটা বোধহয় নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে। মানুষের সঙ্গে সহজে মিশতে পারা সাবিনার একটা বড়ো গুণ। তাই তিনি ফুটপাথে হোটেল খুলে বসা বা বাজারে সবজি বা মাছ বিক্রেতা মানুষগুলোর গল্প জেনে নেন। তাঁদের বাড়িতে নিমন্ত্রিত হয়ে জেনে নেন রান্নার সহজ অথচ গূঢ় কিছু কৌশল। সামান্য আয়োজনেই সেজে উঠেছে এ বইয়ের অধিকাংশ রান্না। তাই এই বই সব্বার। হোস্টেল থেকে বেরিয়ে সদ্য চাকরি পাওয়া তরুণ-তরুণীর। মধ্যবয়সি দম্পতির। গতযৌবন প্রৌঢ়-প্রৌঢ়ার। এমনকি জীবনের অপরাহ্নে পা রাখা মানুষদেরও। কেউ খুঁজে পাবেন রান্নাঘর থেকে বাড়ির মানুষদের মন জয় করার সহজ সূত্র। আবার কেউ বা পাবেন নিখাদ ভালোবাসা। খাদ্যবিলাসী বাঙালির জয় হোক। সাহিত্যপ্রেমী বাঙালির জয় হোক।