আমাদের দেশে ২০২৩ সাল থেকে নতুন যে শিক্ষাক্রম চালু হলো সেটা নিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচল শেষ হচ্ছে না। আগের মতো পরীক্ষা বা পাস-ফেল না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা আর পড়িমরি করে উর্ধ্বশ্বাসে নম্বরের পেছনে ছুটছে না বলে অভিভাবকরা চিন্তায় পড়ে গেছেন। ওদিকে অনেক শিক্ষক এখনো 'করতে পারি কিন্তু কেন করব' এই মনোভাব নিয়ে বসে আছেন। শিক্ষা প্রশাসনও ভাবছে আগের মতো এবারও তাঁরা শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘাড়ে ধরে কাজটা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করাটা কঠিন নয়, কঠিন হচ্ছে এটার প্রয়োজন, প্রকৃতি ও প্রেক্ষাপটটাকে বোঝা। এটা বুঝলেই অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা, শিক্ষকদের নির্বিকার মনোভাব ও শিক্ষা প্রশাসনের মান্ধাতা আমলের দৃষ্টিভঙ্গি দূর হবে। এসব দূর করার উদ্দেশ্যেই এই বইতে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে কেন, কোন সামাজিক-দার্শনিক-বৈজ্ঞানিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অন্য অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও এই ধরনের শিক্ষাক্রম প্রয়োজন হয়ে পড়ল; কীভাবেই-বা সবাই মিলে এটাকে বাস্তবায়ন করা যাবে। দেশের শিক্ষা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গবেষকসহ শিক্ষা বিষয়ে আগ্রহী সকলের জন্য নতুন শিক্ষাক্রম। শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রশাসনের ভূমিকা নিঃসন্দেহে সংগ্রহে রাখার মতো একটি বই।
Title
নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা প্রশাসনের ভূমিকা
সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, জন্ম ১৯৬৩ সালে। গ্রাম, মফস্বল ও শহরের নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ও কলেজ জীবন অতিবাহিত করে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতাকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করে ১৯৯৩ সালে তিনি যোগ দেন বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের বেশ কিছু কলেজে শিক্ষকতা করার পর তিনি লিয়েনে সৌদি আরবের কিং খালিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। লিয়েন থেকে ফিরে এসে মাউশির চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক নিযুক্ত হন তিনি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিনি যথাক্রমে নায়েমের মহাপরিচালক ও মাউশির মহাপরিচালকের পদ অলংকৃত করেন। ২০২২ সালে অবসর গ্রহণের পর থেকে তিনি জাতিসংঘের শিশু, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক বিশেষ সংস্থা ইউনিসেফের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। লেখালেখির জগতে তাঁর পদচারণার সময়টা নাতিদীর্ঘ হলেও একাডেমিক ক্ষেত্রে তাঁর প্রকাশনার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। শিক্ষা বিষয়ক তাঁর প্রায় ২০টি গবেষণামূলক প্রবন্ধ খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত ও উদ্ধৃত হয়েছে। এছাড়া, তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য গবেষণা অভিসন্দর্ভও রয়েছে। ইতিপূর্বে প্রকাশিত তাঁর বইয়ের সংখ্যা ৩টি বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্লেটো : দর্শন ও রাষ্ট্রচিন্তা, অবসর থেকে প্রকাশিত অস্তিত্ববাদের স্রষ্টা সোরেন কিয়ের্কেগার্দ এবং বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি দিবালোকে দুঃস্বপ্ন। এগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বইটি প্রথম আলো নির্বাচিত তরুণদের শ্রেষ্ঠ ১০টি বইয়ের তালিকায় স্থান করে নেয়। নতুন শিক্ষাক্রম : শিক্ষকের ভূমিকা তাঁর লেখা চতুর্থ বই।